বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণায় বরাদ্দ বাড়াতে হবে

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

জ্ঞানের পরিসরে নতুন জ্ঞানের মাত্রা সংযোজন করতে গবেষণার প্রয়োজন অপরিসীম। গবেষণার মাধ্যমে সমাজে বিদ্যমান সমস্যাদির প্রকৃতি ও গভীরতা জানা যায় এবং তার পাশাপাশি সমস্যা সমাধানের পথও বের করা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণার পীঠস্থান বলা হলেও আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা এখনো প্রাথমিক স্তরেই আটকে আছে। আর যতটুকু গবেষণা হচ্ছে তার প্রচার ও সম্ভাব্যতার সুযোগ নেই বললেই চলে। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।   

নিবন্ধে আরও জানা যায়, উচ্চশিক্ষার মান বাড়াতে গবেষণার বিকল্প নেই। উন্নত দেশে গবেষণায় প্রচুর অর্থ ব্যয় হলেও আমাদের দেশে তা একেবারেই সামান্য। বেশির ভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ই গবেষণাকে তেমন একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না। যার দরুণ দেশে উচ্চশিক্ষার মান তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। শিক্ষকের মধ্যে যখন শিক্ষা মুখ্য বিষয় না হয়ে বাণিজ্যিকীকরণ ও রাজনীতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়, তখন শিক্ষা হয় ভূলুণ্ঠিত আর শিক্ষার্থীরা হয় নির্যাতিত। পর্যাপ্ত গবেষণা না হওয়ার পেছনের কিছু কারণের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বাজেটের ঘাটতি, গবেষণায় জবাবদিহি না থাকা, দুর্নীতি, ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি উল্লেখযোগ্য।

ইউনেসকোর পরামর্শ অনুযায়ী, মোট দেশজ উত্পাদনের ৬ শতাংশ শিক্ষা খাতে ব্যয় করার কথা। কিন্তু আমাদের দেশে ১.৭৬ শতাংশ ব্যয় করা হয় এই খাতে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আমাদের দেশে শিক্ষায় বরাদ্দের হার সবচেয়ে কম। আবার যে পরিমাণ বরাদ্দ থাকে তার বেশির ভাগই অবকাঠামো নির্মাণ, শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতায় চলে যায়। গবেষণায় বরাদ্দ নেই বললেই চলে।

বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা অগ্রাধিকার না পাওয়ার উল্লেখযোগ্য কারণ হলো অকার্যকর উচ্চশিক্ষাব্যবস্থা। আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষায় প্রতিষ্ঠান থেকে আহরিত জ্ঞান কতটুকু উন্নয়নমুখী তা কখনো উন্নয়ন পরিকল্পনায় অগ্রাধিকার পায়নি। আমাদের কতজন শিক্ষক, চিকিত্সক, প্রকৌশলী, কৃষিবিদ, ব্যবস্থাপক লাগবে তা হিসাব না করেই যত্রতত্র ব্যাঙের ছাতার মতো বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হচ্ছে। আবার সেই অনুযায়ী শিক্ষা কারিকুলামও তৈরি হচ্ছে না। বর্তমানে উচ্চশিক্ষা আবর্তিত হয়েছে শুধু সরকারি চাকরি কিংবা কোম্পানির চাহিদাকে কেন্দ্র করে। হাতে গোনা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা হলেও তার প্রায়োগিক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের সুযোগ নেই বললেই চলে। 

বর্তমান প্রজন্মকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। গবেষণার মাধ্যমে আমাদের নতুন জ্ঞান ও ধারণার জন্ম হবে। শিক্ষা উন্নয়নের কথা চিন্তা করার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শিক্ষাদান ও গবেষণা নিয়ে চিন্তা করতে হবে। জ্ঞান বিতরণের আগে প্রয়োজন জ্ঞান সৃষ্টি এবং জ্ঞান আহরণ, যা সম্ভব হয়ে ওঠে গবেষণার মাধ্যমে। গবেষণায় বিনিয়োগ কখনো অপচয় নয়। গবেষণা ব্যয়বহুল এবং এর ফল প্রাপ্তি দেরিতে হলেও গবেষণায় বিনিয়োগ কখনো ব্যর্থ হয় না।

লেখক : আইরিন হাসান, শিক্ষার্থী


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্মরণশক্তিকে মেধা বলার মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে - dainik shiksha স্মরণশক্তিকে মেধা বলার মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে প্রাথমিকের দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হতে পারে কাল - dainik shiksha প্রাথমিকের দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হতে পারে কাল চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান রেজাউল - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান রেজাউল বিদেশ নির্ভরতা কমাতে মানসম্মত উচ্চশিক্ষার তাগিদ ইউজিসির - dainik shiksha বিদেশ নির্ভরতা কমাতে মানসম্মত উচ্চশিক্ষার তাগিদ ইউজিসির এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে বদলি প্রত্যাশী শিক্ষকদের কষ্ট - dainik shiksha বদলি প্রত্যাশী শিক্ষকদের কষ্ট একাদশে ভর্তি আবেদন ২৬ মে থেকে ১১ জুন - dainik shiksha একাদশে ভর্তি আবেদন ২৬ মে থেকে ১১ জুন কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু ২৬ মে - dainik shiksha একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু ২৬ মে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0051441192626953