বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখনো বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে উঠতে পারেনি: জাফর ইকবাল

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন লেখক, প্রযুক্তিবিদ ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। অনুষ্ঠান শেষে কথা বলেছেন দেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা ও উচ্চশিক্ষার সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে। 

বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বর্তমান অবস্থা নিয়ে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কেমন?

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল : আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখনো বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে উঠতে পারেনি। এগুলোকে ‘টিচিং ইউনিভার্সিটি’ বলা যায়। এখানে শিক্ষার্থীদের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পড়ার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। পিএইচডি করার সুযোগ খুব সীমিত। এজন্য সারা দেশে বছরে এক হাজার পিএইচডি আমরা তৈরি করতে পারি না। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই গ্র্যাজুয়েট স্কুলের মতো পিএইচডির সুযোগ থাকলে, এখানে একটা নলেজ পুল তৈরি হতো। নতুন উদ্ভাবন দেখতে পেতাম।

গবেষণায় পিছিয়ে আছি কেন?

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল : আমরা এখনো ঠিকমতো গবেষণা শুরু করতে পারিনি। আমাদের দেশে ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির সংখ্যা নেই বললেই চলে। যদি এরকম গবেষণার ক্ষেত্র থাকত, তাহলে বিদেশে যারা যাচ্ছে তারা ওই চ্যালেঞ্জটা নেওয়ার জন্য দেশে থাকত। আমাদের দেশের উন্নয়নের জন্য এটা খুবই জরুরি। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে চাইলে গবেষণার পরিবেশ তৈরির বিকল্প নেই।

উন্নতির জন্য কী কী প্রয়োজন?

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল : গবেষণার জন্য প্রথমত দরকার ফান্ডিং, দ্বিতীয়ত সময়। একটা বিশ্ববিদ্যালয় চাইলেই সেটি পারবে না। ভারত আজ নামমাত্র খরচে চন্দ্র বিজয় করেছে। কারণ তারা প্রচুর গবেষণা করে। শিক্ষার্থীদের গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় ফান্ডিং না হলে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল আসবে না। এর জন্য সরকার ও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে ফান্ডিংয়ের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।

শিক্ষার্থীদের এখন কোন বিষয়ে সচেতন থাকা দরকার?

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল : ২০১৩ সালের পর থেকে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে একটা বড় পরিবর্তন এসেছে। ইন্টারনেটে অনেক বেশি সময় ব্যয় করায় তাদের মনোযোগ ক্ষমতা কমে গেছে। এটা সত্য, এখনকার ছেলেমেয়েরা নতুন নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে বড় হচ্ছে; কিন্তু প্রযুক্তির ব্যবহারেও সচেতন থাকা দরকার।

মেধাবীরা দেশে ফিরছে না কেন?

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল : ছেলেমেয়েরা উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে গিয়ে পড়াশোনা করতেই পারে; কিন্তু আমার মনে হয় তাদের একটা বড় অংশের দেশে ফিরে আসা উচিত ছিল। মেধাবীরা যেন দেশে ফিরে আসে এজন্য দেশে জীবনযাত্রার মান, কর্মক্ষেত্রের ব্যবস্থা ও প্রণোদনার মতো বিষয়গুলোতে সরকারি পর্যায় থেকে উদ্যোগ নেওয়া উচিত। তাদের ফিরিয়ে আনলে দেশের লাভ হবে।

পরিশেষে তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মাইন্ডসেট পরিবর্তন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তবুদ্ধির চর্চা স্থান। তাদের উদার হতে হবে। যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা মোকাবিলার সাহস রাখতে হবে। একটা ছোট গণ্ডির মধ্যে নিজেকে আটকে রাখলে চলবে না। সারা পৃথিবীর মানুষের সঙ্গে কথা বলা, যোগাযোগ রাখার মতো নিজেকে গড়ে তুলতে হবে।’

সূত্র: ১০ সেপ্টেম্বর, দৈনিক কালবেলা


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মাদরাসা শিক্ষকদের আগস্ট মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha মাদরাসা শিক্ষকদের আগস্ট মাসের এমপিওর চেক ছাড় মাই*রা শ্যাষ কইরা দেন, শেখ হাসিনাকে বলেছিলেন দুই ভিসি - dainik shiksha মাই*রা শ্যাষ কইরা দেন, শেখ হাসিনাকে বলেছিলেন দুই ভিসি আমি আশ্বাস দিচ্ছি, নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha আমি আশ্বাস দিচ্ছি, নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপদেষ্টা গুচ্ছের ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ ধাপের ভর্তি ৩ সেপ্টেম্বরের পর - dainik shiksha গুচ্ছের ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ ধাপের ভর্তি ৩ সেপ্টেম্বরের পর অষ্টম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন শুরু ১০ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন শুরু ১০ সেপ্টেম্বর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান রকিব উল্লাহ - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান রকিব উল্লাহ শিক্ষাগুরুর মর্যাদা কবিতাটি পাঠ্যবই থেকে বাদ দিয়েছিলেন কামাল চৌধুরী - dainik shiksha শিক্ষাগুরুর মর্যাদা কবিতাটি পাঠ্যবই থেকে বাদ দিয়েছিলেন কামাল চৌধুরী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ - dainik shiksha প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ সোমবার রাত ৮টা পর্যন্ত চিকিৎসকদের শাটডাউন স্থগিত - dainik shiksha সোমবার রাত ৮টা পর্যন্ত চিকিৎসকদের শাটডাউন স্থগিত শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন : এহছানুল হক মিলন - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন : এহছানুল হক মিলন পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন ৪৯ হিন্দু শিক্ষক - dainik shiksha পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন ৪৯ হিন্দু শিক্ষক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0045509338378906