বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় সাড়া কম, আবেদন ফি দ্বিগুণ

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

এইচএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। ভর্তি সার্কুলারের সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়। কিন্তু প্রথম বারের মতো গুচ্ছ পদ্ধতিতে ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে আবেদন পড়েছে অনেক কম। এ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন খোদ উপাচার্যরা। এমনকি তারা হতাশও হয়েছেন। 

প্রথম বারের মতো দেশের ২০টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হচ্ছে। এতে একটি আবেদন করলেই চলবে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পছন্দের অপশনও থাকবে। প্রথম ধাপে বিনা মূল্যে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে উত্তীর্ণদের জন্য প্রথমে ৬০০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু আবেদন কম পড়ায় এটি এখন ১ হাজার ২০০ টাকা করা হয়েছে। সোমবার (৩০ আগস্ট) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন নিজামুল হক ও আরফিন শরিয়ত। 

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, ভর্তি সার্কুলারে এসএসসি ও এইচএসসিতে মোট জিপিএ বিজ্ঞান শাখার জন্য ন্যূনতম ৮, বাণিজ্য শাখার জন্য ন্যূনতম জিপিএ-৭.৫০ ও মানবিক শাখার জন্য ন্যূনতম জিপিএ ৭ থাকার শর্ত ছিল। এবার এইচএসসিতে সবাই উত্তীর্ণ হয়। সে হিসাবে ১৩ লাখ ৬৪ হাজার পাশ করলেও এই ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শর্ত অনুযায়ী ৮ লাখের বেশি শিক্ষার্থীর আবেদনের সুযোগ ছিল। কিন্তু ২৩ হাজার আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে মাত্র ৩ লাখ ৬০ হাজার। আসন বেশি থাকার পরও কম আবেদন কেন—এটাই বিস্ময়ের কারণ। অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন সংখ্যা ৬ হাজার হলেও এবার আবেদন পড়েছে ২ লাখ। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর জানান, প্রাথমিক আবেদনে কোনো টাকা নেওয়া হয়নি। আশা করেছিলাম ৭/৮ লাখ আবেদন পড়বে। কিন্তু এত কম আবেদন পড়ায় আমরা বিস্মিত হয়েছি।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, বেশি শিক্ষার্থীকে আবেদনের সুযোগ দেওয়ার জন্য জিপিএ কমানো হয়েছিল। কিন্তু সেভাবে আবেদন পড়েনি। কেন আবেদন কম পড়েছে সেটা এখনো বোঝা যাচ্ছে না।

ভর্তি কমিটির সঙ্গে জড়িত এক শিক্ষক বলেন, বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হবে এ কারণে ভর্তির আবেদন ফি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু আবেদন কম হওয়ায় পরীক্ষা পরিচালনা ব্যয় সংকুলানের জন্য দ্বিতীয় ধাপে ভর্তি ফি দ্বিগুণ করে ১ হাজার ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবেদন কম পড়ার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পরিচালক ও অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হালিম বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতিটা এবার প্রথম বারের মতো সূচনা হচ্ছে, এ কারণে কম আবেদন পড়তে পারে। তাছাড়া এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকগুলো জেলা পর্যায়ে থাকায় পরীক্ষার্থীদের পক্ষে সেসব জেলা দূরে হয়ে যায়। সেজন্যও তারা আগ্রহ বোধ করছে না।  

গুচ্ছভুক্ত ২০ বিশ্ববিদ্যালয় হলো :জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

এদিকে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৬৩টি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ৮৮৯ আসনের বিপরীতে ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৭৮টি আবেদন জমা পড়েছে। এছাড়া দ্বিতীয়বারের মতো কৃষিবিজ্ঞান বিষয়ে ডিগ্রি প্রদানকারী সাতটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবার। এবার ৮০ হাজার ৯৩৩ জন প্রাথমিক আবেদন করে। সিট সংখ্যার ১০ গুণ অর্থাত্ ৩৪ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী বাছাই করা হয়েছে; যারা দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষায় অংশ নেবে। এই ৭ বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? - dainik shiksha শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ - dainik shiksha অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে - dainik shiksha সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027110576629639