বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে ছাত্র ফ্রন্টের সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। এ দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সংগঠনটি। বুধবার (২৮ অক্টোবর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, পাবলিক বিশ্ববদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে অনলাইনে ক্লাসের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিলো। আমরা অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি এই ক্লাসগুলোতে বড় অংশের ছাত্ররা অংশগ্রহণ করতে পারেনি। এর পেছনের কারণ ডিভাইস না থাকা, ডাটা কিনতে না পারা, নেট সমস্যাসহ আরও কিছু বাস্তব পরিস্থিতি। এ সমস্যাগুলো এখনও সমানভাবে আছে। শহরের বা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল পরিবারে বেড়ে ওঠা একজন শিক্ষার্থী যতটুকুও অনলাইন সিস্টেমে অভ্যস্ত গ্রামের একজন শিক্ষার্থী এখান থেকে অনেক দূরে। ফলে অনলাইন ভর্তি পরীক্ষা বৈষম্য তৈরি করবে ও ভর্তি পরীক্ষার্থীদের বিপদে ফেলবে।

বক্তারা আরও বলেন, আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একদিনে এক থেকে দেড় ঘণ্টার একটা ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রক্রিয়ায় মেধার বাস্তব মূল্যায়ন সম্ভব নয়। ফলে কাঠামোর মধ্যেই বৈষম্য বিদ্যমান। এখন এই পরীক্ষা অনলাইনে অনুষ্ঠিত হলে প্রকৃত মেধা যাচাইয়ের সম্ভাবনা আরও তলায় গিয়ে ঠেকবে। ভর্তি পরীক্ষা একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন ও ভবিষ্যৎ কর্মজীবনকে প্রভাবিত করে। যদিও সরাসরি ভর্তি প্রক্রিয়ার মধ্যেও বহু গলদ রয়েছে। তবুও তা দীর্ঘদিন ধরে চলে এসেছে এবং শিক্ষার্থীরাও এর সাথে অভ্যস্ত। তাই সরাসরি ভর্তি প্রক্রিয়া যৌক্তিক। 

তারা আরও বলেন, অনলাইন ক্লাস যেখানে পরীক্ষামূলক পর্যায়েই ব্যর্থ, সেখানে নানারকম ত্রুটি ও বৈষম্যের সুযোগ বজায় রেখে ভর্তি পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার ক্ষেত্রে অনলাইন পদ্ধতিতে চলে যাওয়া কোনো বিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত বলে আমাদের মনে হয় না। ভর্তি পরীক্ষার অনলাইন ফরম বিক্রি করে বিরাট অংকের টাকা আয় করা ছাড়া এ থেকে আর কোনো অর্জনের দিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই।

বক্তারা আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ দু’একটা প্রতিষ্ঠান সরাসরি ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরীক্ষাগুলো বিকেন্দ্রীকরণ করে বিভাগীয় পর্যায়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এভাবে অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও স্বাস্থ্যবিধি মেনে, বিভাগীয় বা জেলা পর্যায়ে পরীক্ষা নিতে পারে, সেটাই যুক্তিযুক্ত। এর আগেও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ‘অটোপাস’ দেয়া হয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থায় এর দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব অবশ্যম্ভাবী। ভর্তি পরীক্ষায় দূর্নীতি ও জালিয়াতি একটি বহুল আলোচিত বিষয়। অনলাইন প্রক্রিয়ায় ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে এটা বেড়ে যাবে বলেই মনে হয়।

সমাবেশে নেতারা শিক্ষার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোনো পর্যালোচনা ছাড়াই সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রতিবাদ জানান। একইসাথে ভর্তি পরীক্ষা অনলাইনে নেয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান। একইসাথে অনলাইন ভর্তি পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা না করলে ছাত্রদের পক্ষ থেকে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান নেতারা।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সভাপতি সভাপতি ডা. জয়দীপ ভট্টাচার্য, সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ারসহ সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034520626068115