বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের আত্মহত্যা ঠেকাতে ফায়ার সার্ভিসের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান

নিজস্ব প্রতিবেদক |

যুবকটি আর বাঁচতে চাচ্ছেন না। মধ্যরাতে তাই তিনি পাঁচ তলার কার্নিশে উঠে পড়েন। তিনি নিচে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করবেন। খবরটি ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। লোকজন ভিড় করতে থাকে ওই ভবনের নিচে। তারা চিৎকার করে বলতে থাকে, বাবা তুমি এ কাজ করো না। তোমার যা সমস্যা বা দাবি-দাওয়া আছে সব মেনে নেওয়া হবে। যুবকটির বাবা-মায়েরও তখন একই কথা। কিন্তু কে শোনে কার কথা! যুবকটি কোনো কথাই শুনবে না। তিনি আত্মহত্যা করবেনই। ইতিমধ্যে ভিড়ের মধ্যে থেকে একজন পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে বিষয়টি জানান। কিছু সময় পর হুইসেল বাজিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে যায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আসে পুলিশও। ঘটনাটি গত শনিবার মধ্যরাতের। ঘটেছে রাজধানীর ঢাকার দক্ষিণখানের কাজীবাড়ি রোডে। পুলিশ জানায়, পরিবার বিয়েতে রাজি নয়, তাই ‘আত্মহত্যার চেষ্টা করতে’ পাঁচতলার কার্নিশে উঠেছিলেন ওই যুবক। মধ্যরাতে প্রায় তিন ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযানে তাকে নামিয়ে আনেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। এই উদ্ধার অভিযানের সময় শত শত উৎসুক মানুষ ওই বাড়ি ঘিরে জটলা করে।

উত্তরা ফায়ার স্টেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সৈয়দ মনিরুল ইসলাম জানান, ২৬ বছর বয়সী ওই যুবক একটি  বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। দক্ষিণখানের ছয় তলা ওই বাড়ির মালিক তার বাবা। ভবনের চতুর্থ তলায় তারা থাকেন। ওই বাড়ির দ্বিতীয় তলায় যারা ভাড়া থাকেন, তাদের এক মেয়ে পড়েন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার সঙ্গে বাড়ির মালিকের ছেলের প্রেমের সম্পর্ক চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। ছেলে বিয়ের জন্য পরিবারকে চাপ দিচ্ছিল, কিন্তু পরিবার রাজি হচ্ছিল না। পরে ছেলে মাঝরাতে পাঁচতলা কার্নিশে উঠে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করার জন্য। আশপাশের লোকজন তাকে দেখে ৯৯৯ এ ফোন দেয়। খবর পেয়ে ওই বাড়িতে ছুটে যান ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। তারা নানাভাবে ওই যুবককে  বোঝানোর চেষ্টা করেন। ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা বলেন, পরে ওই তরুণী এবং তার মাকেও ডেকে আনা হয়। তারাও ছেলেটিকে  নেমে আসতে অনুরোধ করেন। কথা বলে সময়ক্ষেপণ করার ফাঁকে ফাঁকে আমরা পাঁচতলার জানালার গ্রিল কাটি এবং রেসকিউ রোপ দিয়ে দ্রুত তাকে বেঁধে ফেলি যাতে লাফিয়ে পড়তে না পারে, পরে তাকে নামিয়ে আনা হয়।

ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা সৈয়দ মনিরুল ইসলাম জানান, বিয়ের জন্য আত্মহত্যার চেষ্টা করা ওই যুবককে তারা পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছেন। তবে এই কান্ডের পর তার পরিবার এখন বিয়েতে রাজি কি না, সে বিষয়ে  কোনো ধারণা তিনি দিতে পারেননি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ - dainik shiksha বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি - dainik shiksha যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই - dainik shiksha শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী - dainik shiksha বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0053510665893555