বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হত্যা প্রসঙ্গে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বিচারহীনতাই সকল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র হত্যার মূল কারণ। গত ১০ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা নিতে এসে লাশ হয়ে বাসায় ফিরেছে ২৪ জন মেধাবী শিক্ষার্থী; এই ২৪ জনের মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ জন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ জন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ জন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ জন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ জন, হাজী মোহাম্মাদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ জন। এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আরো ৩টি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২০ অক্টোবর) সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও বলা হয়, এই পরিসংখ্যানটি যদি একটু পিছিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে দেখা হয়, তাহলে দেখা যায় যে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে হত্যা হওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৫১ জন বলে সংবাদ মাধ্যম হতে জানা যায়। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭৪ জন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৯ জন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯ জন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯ জন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭ জন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ জন করে, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং হযরত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ জন করে শিক্ষার্থী হত্যা হয়েছে। এই হত্যাগুলোর কারণ হিসেবে দেখা যায় লেজুরভিত্তিক রাজনীতি, বিচারহীনতার সংস্কৃতি, ক্ষমতাশীন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের আধিপত্য বিস্তার, অভ্যন্তরীণ কোন্দল, চাঁদা ও টেন্ডারবাজি, মত পার্থক্য। তবে এই হত্যাগুলোর সঠিক বিচার কখনোই হয় নি; বিচার হলেও সুষ্ঠ বিচার হয় নি। যা পরবর্তীতে নতুন একটি হত্যার অনুপ্রেরণা হিসেবে ধরা যায়।

উচ্চশিক্ষা নিতে আসা মেধাবী শিক্ষার্থীগুলো অপরাজনীতির স্বীকার হয়ে শুধু খুন ই হয় না, খুনি ও তৈরি হয়। পূর্বের ঘটনাগুলোতে গুটিকয়েক মানুষই কেবলমাত্র প্রতিবাদ করেছে আর বাকিরা দর্শকের ভূমিকা ছিল। শুধু দর্শকের ভূমিকায় নয় বরং অনেকেই হয়ত সেই সব হত্যাকে সমর্থনও দিয়েছে। এমন উটপাখির মতো আচরণই আরেকটি হত্যার সুযোগ করে দেয়।

প্রতিবছর উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে ভর্তি পরীক্ষা নামক যুদ্ধে উত্তীর্ণ হয়ে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন নিয়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। কিন্তু কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা অনেকের প্রাণ এবং তাদের পরিবারের স্বপ্ন কেড়ে নেয়। এইসব অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা রোধ করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। অতীতে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের মাধ্যমেই এইরকম রোমহর্ষক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব।

সাব্বির সোহাগ : শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025961399078369