কুষ্টিয়ায় বিষাক্ত অ্যালকোহল পানে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শেষবর্ষের ছাত্র সিফাতুল আলম সিপুসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (২৪ এপ্রিল) ভোরের দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজন এবং দুপুরের দিকে আরও একজন মারা যান। অ্যালকোহল পান করে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও দুজন।
নিহতরা হলেন কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও ভেড়ামারা উপজেলার রকিবুল আলমের ছেলে সিফাতুল আলম সিপু (২৭), কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বড় আইলচারা এলাকার মৃত হারুন অর রশিদের ছেলে শাহিন (৪৭), মিরপুর উপজেলার মশান বারুই পাড়া গ্রামের মৃত হানিফের ছেলে মো. রতন (২১) ও একই এলাকার খলিলের ছেলে সবুজ (২৪)।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার বলেন, রোববার (২৩ এপ্রিল) রাতে বিষাক্ত তরল দ্রব্য পান করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় একে একে আটজন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের পাকস্থলী ওয়াশসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়। এদের মধ্যে সোমবার ভোরের দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজন ও দুপুরের দিকে আরও একজনের মৃত্যু হয়। এখন চিকিৎসাধীন আরও দুজন। তারা বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।
এদিকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী হাসপাতালের মর্গ থেকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সিফাতুল আলম সিপুর মরদেহ নিয়ে যেতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এনিয়ে পুলিশের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ নিয়ে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ বলেন, সিফাতুল আলম সিপু জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও খুব মেধাবী ছাত্র ছিলেন। রাতে খাবার খেয়ে হঠাৎ স্ট্রোক করলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোরের দিকে সিপু মারা যান। তার মৃত্যুকে ঘিরে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেন এ ছাত্রলীগ নেতা।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাৎ হোসেন বলেন, বিষাক্ত অ্যালকোহল পানে অসুস্থ হয়ে বেশ কয়েকজন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে চারজনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে রতন ও শাহিনের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই সিফাতের মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে এখনো আটক করা যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এ বিষয়ে কথা বলতে কুষ্টিয়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক পারভীন আখতারের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।