বুদ্ধিজীবী আবুল হাশিমের জন্মদিন আজ

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

মুসলিম জাতীয়তাবাদী রাজনীতিক ও বুদ্ধিজীবী আবুল হাশিমের আজ জন্মদিন। তিনি ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে বর্ধমানের কাশিয়াড়ায় জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবুল কাশেম বর্ধমানের কংগ্রেসের বিধায়ক ও একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা ছিলেন।

১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে তিনি গ্র্যাজুয়েট হন। হাশিম ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে আইন শাস্ত্রে ডিগ্রি লাভ করেন এবং ওই বছরই বর্ধমান জেলা কোর্টে আইন ব্যবসা শুরু করেন। 

পারিবারিক ঐতিহ্য অনুসরণ করে তিনি ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে রাজনীতিতে যোগ দেন এবং বর্ধমান থেকে বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। বর্ধমান মুসলিম লীগের সভাপতি হিসেবে আবুল হাশিম এলাহাবাদে অনুষ্ঠিত সর্বভারতীয় মুসলিম লীগ সম্মেলনে এবং ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে সর্বভারতীয় মুসলিম লীগের লাহোর সম্মেলনে যোগ দেন। ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বঙ্গীয় প্রাদেশিক  মুসলিম লীগ এর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সাংগঠনিকভাবে বাংলায় মুসলিম লীগকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। প্রকৃতপক্ষে ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত নির্বাচনসমূহে মুসলিম লীগের সাফল্য প্রধানত হাশিমের গতিশীল নেতৃত্বের কারণেই সম্ভব হয়েছিলো। হাশিম ছিলেন ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের ‘অবিভক্ত স্বাধীন বাংলা’ পরিকল্পনার অন্যতম রূপকার। তবে তার এ পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছিলো।

ভারত বিভাগের পর আবুল হাশিম পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক আইনসভার বিরোধীদলের সংসদীয় নেতা নির্বাচিত হন। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে আবুল হাশিম পূর্ববঙ্গে চলে আসেন এবং ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।

ভাষা আন্দোলনে তিনি অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। সমসাময়িক রাজনৈতিক দলগুলোর মতাদর্শের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাওয়াতে না পেরে হাশিম ‘খিলাফত-ই-রববানী পার্টি’ নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন। ইসলামী আদর্শ বাস্তবে রূপায়িত করাই ছিলো এ দলের উদ্দেশ্য। ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি এ দলের সভাপতি ছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত চল্লিশের দশকের শেষের দিক থেকে তার দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পেতে থাকে এবং পঞ্চাশের দশকে তিনি দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু এ দৈহিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তিনি বলিষ্ঠভাবে জ্ঞান চর্চা ও সামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে থাকেন। ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে আবুল হাশিমকে ইসলামিক একাডেমির পরিচালক নিয়োগ করা হয়। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় তিনি বেশ কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করেন। এদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে The Creed of Islam, In Retrospection, Let us go to War এবং As I see it। এই রাজনীতিক ও বুদ্ধিজীবী ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দের ৫ অক্টোবর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সরকার পরিচালনায় ভুলত্রুটি থাকলে ধরিয়ে দিন, সম্পাদকদের ড. ইউনূস - dainik shiksha সরকার পরিচালনায় ভুলত্রুটি থাকলে ধরিয়ে দিন, সম্পাদকদের ড. ইউনূস এইচএসসি ফল তৈরি: পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়েছে বোর্ড - dainik shiksha এইচএসসি ফল তৈরি: পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়েছে বোর্ড শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য ও হেনস্তা নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য ও হেনস্তা নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের আগস্ট মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের আগস্ট মাসের এমপিওর চেক ছাড় এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ডিজি হলেন - dainik shiksha এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ডিজি হলেন ছাত্রী হয়রানির অভিযোগ, উত্তরা ইউনিভার্সিটি উত্তপ্ত - dainik shiksha ছাত্রী হয়রানির অভিযোগ, উত্তরা ইউনিভার্সিটি উত্তপ্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের হাত ভাঙলেন বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক - dainik shiksha ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের হাত ভাঙলেন বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক সাংবাদিক নিপীড়নের আইনগুলো এখনই বাদ দেয়ার প্রস্তাব - dainik shiksha সাংবাদিক নিপীড়নের আইনগুলো এখনই বাদ দেয়ার প্রস্তাব মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার চলতি দায়িত্ব দিতে আবেদন আহ্বান - dainik shiksha মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার চলতি দায়িত্ব দিতে আবেদন আহ্বান শিরীন শারমিনের পদত্যাগে স্পিকার পদে কি শূন্যতা তৈরি হলো - dainik shiksha শিরীন শারমিনের পদত্যাগে স্পিকার পদে কি শূন্যতা তৈরি হলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029499530792236