রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদ উল হাসান জয়ের বিরুদ্ধে আবাসিক হলে টর্চার সেল গঠন করে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, জয়ের অমানবিক নির্যাতন সহ্য করেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের হলে থাকতে হয়। তবে অভিযুক্ত জয় বলছেন, রাগের বশে দুজন শিক্ষার্থীকে চড় মেরেছিলেন তিনি। আর টর্চার সেলে নির্যাতনের অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি তার। যদিও নির্যাতনের অভিযোগে, তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে।
রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ বেরোবি শাখার বিগত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদ উল ইসলাম জয়। থাকেন শহীদ মুখতার ইলাহী হলের ৫শ ৯ নম্বর কক্ষে। এই কক্ষটি টর্চার সেল হিসেবে পরিচিত। যেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ডেকে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে সাবেক এই সাবেক নেতার বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জয়ের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে সদর কোতয়ালি থানা এবং চলতি বছরের শুরুতে তাজহাট থানায় একটি হত্যা মামলাসহ তিনটি মামলা রয়েছে। এছাড়া দুটি সাধারণ ডায়রিও করা হয়েছে। তবে মামলার দুবছর পেরিয়ে গেলেও তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। পুলিশ বলছে, তিনি জামিনে আছেন।
রংপুরের তাজহাট থানার ওসি শেখ রোকনুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীরা যেন সুন্দর পরিবেশে পড়াশুনা করতে পারে সেজন্য সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহনে বদ্ধ পরিকর প্রশাসন। তবে কেউ যদি অভিযোগ করে তাহলে অবশ্যই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ক্ষমতা দেখিয়ে হলের বৈধ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় এবং বহিরাগতদের বিভিন্ন কক্ষে থাকার ব্যবস্থা করেন জয়। এছাড়া প্রভাব বিস্তার করতে কোন কারণ ছাড়াই নির্মম নির্যাতন করেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা দায় স্বীকার করেন। বেরোবির সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদ উল ইসলাম জয় বলেন, রাগের বশে শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরণ করেছেন তিনি।
টর্চার সেলের কথা অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতারা বলছেন, কারো বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি তুষার কবিরিয়া বলেন, এমন ঘটনা তার জানা নেই। তবে প্রমাণ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, এরই মধ্যে জয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন আসার পরই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. আতিউর রহমান বলেন, এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে বলে জানান প্রক্টর মো. আতিউর রহমান।
অভিযুক্ত জয় রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিগত কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে থাকলেও সম্প্রতি নতুন যে কমিটি হয়েছে সেখানে এখনও তিনি কোন পদ পাননি।