বেরোবিতে প্রকৌশলীকে তুলে নেওয়ার হুমকি শিক্ষকের

বেরোবি প্রতিনিধি |

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জুবায়ের ইবনে তাহেরের বিরুদ্ধে সহকারী প্রকৌশলী (পুর) কমলেশ চন্দ্র সরকারকে ৫ মিনিটের মধ্যে তুলে নেওয়ার হুমকি দিয়ে নিজ বিভাগ থেকে ৩০-৩৫ জন শিক্ষার্থী পাঠিয়ে অপমান করার অভিযোগ উঠেছে।

রবিবার (২৬ জানুয়ারী) সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী ইঞ্জিনিয়ার কমলেশ চন্দ্র সরকার।

আবেদনে তিনি জানান, রবিবার (২৬ জানুয়ারী) দুপুর ১২টায় লোকপ্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. জুবায়ের ইবনে তাহের ইন্টারকম ফোনের মাধ্যমে রুমে দূর্গন্ধ আসার অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঐ মূহুর্তেই প্লাম্বার মো. আইয়ুব আলী ও কেয়ারটেকার মো. জিয়াউর রহমানকে লোকপ্রশাসন বিভাগে পাঠানো হয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে তারা দেখতে পান সেটা প্লাম্বিং সমস্যা নয়, সমস্যাটি পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক অর্থ্যাৎ কাজটি সুইপারদের। তাৎক্ষণিকভাবে সুইপার ডাকা হয়। সুইপার গোপনে বলেন কাজটি আমি একা করতে পারব না। কাজটি করতে বাহিরের একজন লোক আনতে হবে। সে সময় বিভাগীয় প্রধান জিআই তার ও কেরোসিন তেল ক্রয়ের জন্য দুই শ টাকা দেন।

পরে প্লাম্বার মো. আইয়ুব আলী বিভাগীয় প্রধানকে বলেন, ইঞ্জিনিয়ার তাকে অন্য দপ্তরে কাজের জন্য ডেকেছেন। জিআই তার ও কেরোসিন তেল কেনা পর্যন্ত তিনি অন্য দপ্তরের কাজটি দেখে আসার জন্য যেতে চাইলে তাকে সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকতে বলেন সেই বিভাগীয় প্রধান। এ সময় তাকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকার জন্য নির্দেশ দিলে তা অস্বীকৃতি জানান তিনি। এ সময় আমাকে (কমলেশ চন্দ্র সরকার) উত্তেজিত অবস্থায় ফোন দিয়ে অভিযোগ দিলে আমি লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা বলি। তখন তিনি আরো উত্তেজিত হয়ে আমাকে ৫ মিনিটের মধ্যে তুলে নেওয়ার হুমকি প্রদান করেন এবং তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার বিভাগ থেকে ৩০-৩৫ জন শিক্ষার্থী পাঠিয়ে দেন।

এ সময় প্রক্টর অফিসের কর্মকর্তা মো. হাফিজ আল আসাদ ও প্রকৌশল দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ তাদেরকে বিভাগে ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করলে তারা ফিরে যায় যা আমার জন্য হুমকিস্বরুপ এবং অপমানজনক।

এ ছাড়াও গতবছর ২৩ এপ্রিল লোক প্রশাসন বিভাগের ৩৭তম একাডেমিক সভা চলাকালে তার নিজ বিভাগের নারী শিক্ষককে উদ্দেশ্য করে অশ্রাব্য, আপত্তিকর ও অশোভন কথাবার্তা বলার অভিযোগ ওঠে। এর প্রেক্ষিতে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর অভিযুক্ত শিক্ষক জুবায়ের ইবনে তাহের বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্টার আব্দুল হাকিমের সাথে অশোভন আচরণ করেন। বিষয়টি নিয়ে গত বছর ১ অক্টোবর গণিত বিভাগের শিক্ষক আর এম হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। কিন্তু ওই শিক্ষকের প্রভাবের কারণে তদন্ত রিপোর্ট আজও আলোর মুখ দেখেনি।

অভিযুক্ত শিক্ষক জুবায়ের ইবনে তাহেরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে এড়িয়ে যান। পরে তিনি বলেন, এটা আমার বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র হতে পারে। তবে আমি যেটা শুনেছি যে, স্টুডেন্টরা বাথরুম অপরিস্কারের বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তরে অভিযোগ করতে গেছিলো।

হুমকির বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, আমি একজন বিভাগীয় প্রধান আর সে আমার নিচের পদে অবস্থান করছে। তাকে তো আমি অর্ডার করলেই আমার অফিসে আসতে বাধ্য। তাই এ ধরণের কোনো কথা বলার প্রশ্নই আসে না।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে - dainik shiksha কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা - dainik shiksha ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন - dainik shiksha সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল - dainik shiksha ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে - dainik shiksha নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0042049884796143