বৈষম্য থেকে মুক্তি চায় প্রাথমিক শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

সমন্বয়হীন ও স্পষ্ট বৈষম্যের মধ্যেই যুগের পর যুগ চলছে প্রাথমিক শিক্ষকদের ভাগ্যের চাকা। সিলমোহর মারা কাগজের পরিপত্র আর মাঠ পর্যায়ের বাস্তব চিত্র আকাশ পাতাল ব্যবধান। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালে প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের পদটি দ্বিতীয় শ্রেণি হিসাবে ঘোষণা দিলেও তা আজ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। প্রাথমিক শিক্ষকরা ৮ বছর পর প্রথম টাইম স্কেল পাওয়ার কথা থাকলেও ৯ মার্চ, ২০১৪ সাল থেকে তা বন্ধ রাখা হয়েছে। টাইম স্কেলসহ তৃতীয় শ্রেণির সুবিধাগুলো চাইতে গেলে প্রধান শিক্ষকদের বলা হয়-আপনারা তো দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মচারী। অথচ সদ্য ঊঋঞ ফরম পূরণ করতে গিয়ে সহকারী শিক্ষক এবং প্রধান শিক্ষকদের তৃতীয় শ্রেণির পদমর্যাদার কলামেই টিকচিহ্ন দিতে হলো। দ্বিতীয় শ্রেণির কলাম ওখানে অনুপস্থিত।বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।

চিঠিতে আরও জানা যায়, প্রধান শিক্ষকদের পদোন্নতির কথা বলা হলেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, প্রধান শিক্ষকের পদটি একটি ‘ব্লক পদ’। সহকারী শিক্ষক থেকে চলতি দায়িত্ব দিয়ে প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব দেওয়ার পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও তাদের আশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে; স্থায়ীভাবে প্রধান শিক্ষক হিসাবে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে না। সহকারী শিক্ষক হিসাবে যোগদান করে সহকারী শিক্ষক হিসাবেই চাকরি শেষ করে অবসরে চলে যাচ্ছে সবাই। পদোন্নতির কথা থাকলেও কোনো এক অজানা কারণে তা আর হচ্ছে না। মাঝে মধ্যে ঊর্ধ্বতন দায়িত্বপ্রাপ্ত মহোদয়গণ ঘোষণা দিচ্ছেন-প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক থেকে ডিজি পর্যন্ত হতে পারবেন! যেখানে সহকারী শিক্ষক হিসাবে যোগদান করে সহকারী শিক্ষক হিসাবেই অবসরে যেতে হয়; সেখানে এ রকম ঘোষণা প্রাথমিক শিক্ষকদের নিয়ে তামাশা ছাড়া আর কী হতে পারে!

দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতির এ যুগে টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড বন্ধ করে রেখে প্রাথমিক শিক্ষকদের সংসার জীবনে এক দুর্বিষহ প্যারার মধ্যে রেখে দেওয়া হয়েছে। ৩ বছর পর পর শ্রান্তি বিনোদনভাতা দেওয়ার কথা থাকলেও সেটা অনেকেই সময় মতো পাচ্ছে না। কোনো কোনো উপজেলার শিক্ষকরা পেলেও আবার কোনো কোনো উপজেলার শিক্ষকরা বঞ্চিত হচ্ছে। ডিপিএড প্রশিক্ষণ শেষে যেখানে বেতনভাতা বাড়ার কথা, সেখানে উল্টো বেতন কমে যাচ্ছে; ব্যাংকে গিয়ে বেতনের টাকা ফেরত দিতে হচ্ছে।

এ রকম অবস্থা চলতে থাকলে জাতি গড়ার কারিগর শিক্ষকরা সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষ হিসাবে চিহ্নিত হবে, যা কিনা একটি উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছার অন্তরায়। মহার্ঘ ভাতা চালু করা এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া টাইম স্কেলগুলো চালু করে দেওয়া এখন সময়ের দাবি। উচ্চপদস্থ স্যারদের প্রতি আকুল আবেদনÑসরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের যুগ যুগ ধরে চলে আসা বিভিন্ন অসামঞ্জস্য চিহ্নিত করে এর একটি সঠিক সমাধান খুঁজে বের করুন।

 

লেখক :  মো. জামিল বাসার, সহকারী শিক্ষক, ধনবাড়ী, টাঙ্গাইল


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023889541625977