বোর্ড কর্মকর্তাদের সহায়তায় ফেল করা শিক্ষার্থীরা যেভাবে পাচ্ছে সার্টিফিকেট

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ জাল সনদ তৈরি ঘটনায় সাত জনকে গ্রেফতার করেছে, যারা বোর্ডের কর্মীদের টাকা দিয়ে হাত করে পাস করা শিক্ষার্থীদের সনদের তথ্য বদলে ফেলতেন।

গ্রেফতাররা হলেন- নূর রিমতি, জামাল হোসেন, এ কে এম মোস্তফা কামাল, মো. মারুফ, ফারুক আহম্মেদ স্বপন, মাহির আলমা ও আবেদ আলী।

শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর, রমনা ও চকবাজার এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

শনিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার জানান, নূর তাবাসসুম নামের এক শিক্ষার্থীর মায়ের ফোনে একটি এসএমএস আসে, তার মেয়ের সার্টিফিকেটের নাম পরিবর্তন হয়ে নূর রিমতি হয়েছে। তারা স্কুলে গিয়ে যোগাযোগ করলে স্কুল থেকে শিক্ষা বোর্ডে যোগাযোগ করতে বলা হয়। পরবর্তীতে শিক্ষা বোর্ডে গিয়ে দেখা যায় এসএসসির পাশাপাশি পিএসসি, জেএসসির সার্টিফিকেটেরও নাম পরিবর্তন হয়ে গেছে।

পরে ভুক্তভোগীর পরিবার ধানমণ্ডি থানায় একটি মামলা করে। মামলার তদন্তের ভার নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।

সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ আক্তার বলেন, “গ্রেফতার নূর রিমতি ২০১৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায় রাজধানীর সিটি মডেল কলেজ থেকে অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হন। কিন্তু তার ইতালি যাওয়ার জন্য এসএসসি সার্টিফিকেট প্রয়োজন ছিল। জাল সনদ তৈরির জন্য তিনি তার মামা গ্রেফতার জামাল হোসেনের মাধ্যমে এ কে এম মোস্তফা কামালের সংগে তিন লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হন।”

তিনি বলেন, “চুক্তি অনুযায়ী মোস্তফা কামাল শিক্ষা বোর্ডের দালাল চক্র গ্রেফতার  মো. মারুফ, মাহবুব আলম, ফারুক আহম্মেদ স্বপন ও আবেদ আজাদের সঙ্গে সমন্বয় করে নূর তাবাসসুমের জেএসসি এবং এসএসসি পাসের তথ্য সংগ্রহ করেন। এরপর তারা প্রথমে শিক্ষার্থীর বাবার নাম, মায়ের নাম সংশোধনের জন্য শিক্ষা বোর্ডের নির্ধারিত ফরমেটে আবেদন করেন।

“শিক্ষা বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারী টাকার বিনিময়ে বোর্ডের ওয়েবসাইটে রেজাল্ট আর্কাইভে নির্ধারিত ফরমেটে সংরক্ষিত শিক্ষার্থী নূর তাবাসসুমের তথ্য পরিবর্তন করে অকৃতকার্য শিক্ষার্থী নূর রিমতির তথ্যগুলো আপলোডের মাধ্যমে জাল সনদ তৈরি করেন। পরবর্তীতে জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে নেন। এমনকি শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটেও শিক্ষার্থীর পরিবর্তিত সংযোজিত তথ্য দেখায়।”

ডিবি কর্মকর্তা হাফিজ আক্তার জানান, এই প্রতারক চক্র ঢাকাসহ অন্যান্য শিক্ষা বোর্ডের বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, জন্ম তারিখসহ অন্যান্য তথ্য পরিবর্তন করে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের তথ্য সংযোজন করে জাল সনদ তৈরির মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।

গ্রেফতারদের আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
১৮তম প্রিলির ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯৮১ - dainik shiksha ১৮তম প্রিলির ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯৮১ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৫ হাজার ৪৫৬ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৫ হাজার ৪৫৬ সাড়ে ৪ মাসে ১৮৮ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, বিশেষজ্ঞরা যেসব বিষয়কে দায়ী করছেন - dainik shiksha সাড়ে ৪ মাসে ১৮৮ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, বিশেষজ্ঞরা যেসব বিষয়কে দায়ী করছেন শতভাগ ফেল স্কুল-মাদরাসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার উদ্যোগ - dainik shiksha শতভাগ ফেল স্কুল-মাদরাসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার উদ্যোগ দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত শিক্ষা কর্মকর্তা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শ্রীপুরে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ভাইয়ের প্রার্থিতা বাতিল - dainik shiksha শ্রীপুরে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ভাইয়ের প্রার্থিতা বাতিল এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বিএনপি-জামায়াত মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করে দেয় : প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha বিএনপি-জামায়াত মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করে দেয় : প্রধানমন্ত্রী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028960704803467