বাজেট প্রস্তাবব্যাংক আমানতে দ্বিগুণ কর, ক্ষুব্ধ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঞ্চয়ী এবং স্থায়ী ব্যাংক হিসাবে থাকা আমানতের মুনাফার ওপর কর হার দ্বিগুণ করেছে সরকার। আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কর বাড়ানোর এ প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, এই প্রস্তাব বাস্তাবায়ন হলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিক্ষার্থীরা।

৬ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এতে ট্রাস্ট, ব্যক্তিসংঘ, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মান্থলি পে-অর্ডারভুক্ত (এমপিও) বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আয়করের আওতাভুক্ত করা হয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানি হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ১৫ শতাংশ হারে কর দিতে হয়। আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সরাসরি কর দিতে হয় না। তবে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাব কিংবা স্থায়ী আমানত থাকলে সেখান থেকে আসা মুনাফার ওপর এতদিন ১০ শতাংশ হারে কর দিতে হতো। নতুন বাজেটে এই কর হার বাড়িয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। কর হার বৃদ্ধির এই প্রস্তাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে দাবি করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা বলছেন, কর হার বাড়ালে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিক্ষার্থীরা। তাদের সহশিক্ষা কার্যক্রম ও বৃত্তির সুযোগ কমতে পারে। এ ছাড়া শিক্ষকদের গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করার জন্য যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনেক সময় প্রণোদনা দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে প্রভাব পড়তে পারে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, ‘আমরা সরকার থেকে যে বাজেট পাই, তা দিয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হয়। এ ছাড়া বাজেট থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খরচ দেওয়া হয়। এমনিতেই খরচ নিয়ে আমাদের হাঁসফাঁস অবস্থা। কারণ আমাদের অভ্যন্তরীণ উন্নয়ন বাজেটও সীমিত। ফলে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, বিভিন্ন জাতীয় ও ধর্মীয় দিবস পালন ইত্যাদির জন্য তেমন একটা বাজেট থাকে না।’ তিনি বলেন, ‘সঞ্চয়ী ও স্থায়ী আমানতের মুনাফার ওপর কর ১০ শতাংশ বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিক্ষার্থীরা। তাদের সহশিক্ষা কার্যক্রমের ওপর প্রভাব পড়বে। শিক্ষকদের গবেষণা খাতেও প্রভাব পড়বে। এতে গবেষণার হার কমে যেতে পারে। বিভিন্ন ফান্ড থেকে শিক্ষার্থীরা যে সহায়তা পায়, সেটিও কমতে পারে। আশা করছি, সরকার এসব বিষয় বিবেচনা করবে।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘এনবিআর চাইলেই যে কোনো প্রস্তাব দিতে পারে। কিন্তু সেটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব কি না, সেটিও বিবেচনা করা উচিত। আমি মনে করি, এটি বাস্তবায়নযোগ্য নয়।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সঞ্চয়ী ও স্থায়ী আমানত আছে, সেটি দিয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়া হয়। বিভিন্ন ট্রাস্ট ফান্ড থেকে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হয়। কিন্তু সঞ্চয়ী ও স্থায়ী আমানতের মুনাফার ওপর ২০ শতাংশ কর আরোপ করলে শিক্ষার্থীরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই চিন্তা থেকে এনবিআরের সরে আসা উচিত।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ডিআইএর নতুন পরিচালক অধ্যাপক আবু কাইয়ুম - dainik shiksha ডিআইএর নতুন পরিচালক অধ্যাপক আবু কাইয়ুম জাতীয়করণসহ তিন দাবিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরিদের অবস্থান - dainik shiksha জাতীয়করণসহ তিন দাবিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরিদের অবস্থান এমপিওর দাবিতে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষকদের পদযাত্রা - dainik shiksha এমপিওর দাবিতে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষকদের পদযাত্রা কারিগরিতে ৪০ শতাংশ নম্বরে উপবৃত্তি - dainik shiksha কারিগরিতে ৪০ শতাংশ নম্বরে উপবৃত্তি কাউকে হেনস্তা না করার আহ্বান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের - dainik shiksha কাউকে হেনস্তা না করার আহ্বান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের আটকের পর বিজিবিকে যে প্রলোভন দেখান বিচারপতি মানিক - dainik shiksha আটকের পর বিজিবিকে যে প্রলোভন দেখান বিচারপতি মানিক নয় বছরের শিক্ষিকাকে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হতে বললেন প্রধান শিক্ষক - dainik shiksha নয় বছরের শিক্ষিকাকে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হতে বললেন প্রধান শিক্ষক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003216028213501