ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস স্কুল অ্যান্ড কলেজের (বিজিএফসিএল) অধ্যক্ষ মোস্তাব আলী (৫৮) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সকাল ১০টার দিকে ২ নম্বর গ্যাস ফিল্ডস কোয়ার্টারের বাথরুম থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন।
মোস্তাব আলী নাটোরের পাইকপাড়া সর্দারবাড়ির প্রয়াত মজির উদ্দিন সরকারের ছেলে। তিনি স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে গ্যাস ফিল্ডসের কোয়ার্টারে থাকতেন।
পুলিশ ও পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৮টায় অধ্যক্ষ মোস্তাব আলী তার গাড়িচালককে বাসায় আসতে বলেন। এরপর তিনি বাথরুমে গোসল করতে যান। অনেকক্ষণ পরও বের না হওয়ায় পরিবারের লোকজনের সন্দেহ হয়। বাথরুমের দরজা ভেঙে তারা ভেতরে গিয়ে শাওয়ারের (ঝরনা) সঙ্গে তার মরদেহ ঝুলতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
মোস্তাব আলীর ছেলে আহমেদ ওয়াসিফ প্রিতুল বলেন, বাবার ব্রাক ব্যাংক, ডাচ বাংলা ও বীজ এনজিওসহ কয়েকটি জায়গা থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। ব্রাক ব্যাংকের চাপ বেশি ছিলো। সঠিক সময়ে ঋণের টাকা ফেরত দিতে না পেরে বাবা আত্মহত্যা করতে পারেন।
ব্রাক ব্যাংকের শাখায় যোগাযোগ করার পর তারা এ বিষয়ে কথা বলতে রাজী হননি। স্থানীয় এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা জানান, কতিপয় শিক্ষা কর্মকর্তা ব্রাক ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ নেয়ার জন্য দূতিয়ালি করেন। কিন্তু কিস্তি দেয়ার জন্য ঋণ কর্মকর্তাদের খারাপ ব্যবহার অসহ্য।
ডাচ বাংলা ব্যাংক ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখার ম্যানেজার বলেন, মঙ্গলবার ব্যাংকের কিস্তির টাকার জন্য ফোন করেছিলাম। আজ (বুধবার) সকালে ব্যাংকে এসে টাকা জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সকাল ১১টায় খবর পেলাম তিনি মারা গেছেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ব্যাংক থেকে মোস্তাব আলী ১৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। গতমাসে ৭-৮ মাসের বকেয়া কিস্তিসহ প্রায় ২ লাখ টাকা জমা দিয়েছিলেন। তার কাছ থেকে এখনও ১২-১৩ লক্ষ টাকা পাওনা রয়েছে ব্যাংকের বলে জানান তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, অধ্যক্ষ মোস্তাব আলী ঋণগ্রস্ত ছিলেন। এছাড়াও তিনি মার্চ মাসের ২ তারিখে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।
ওসি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে মরদেহ সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।