হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ এনে ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়্যেদুল হক সুমনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে করা মামলা তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২২ জুলাই) বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস সামশ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এর আগে আজ দুপুরে আদালতে গৌতম কুমার নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে মামলাটি করেন। বিচারক বাদীর জবানবন্দি শুনে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভাষানটেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল আইনে ব্যারিস্টার সুমনের বিরুদ্ধে মামলা
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি নজরুল ইসলাম শামীম বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আরজিতে জানানো হয়, গত ১৯ জুলাই ব্যারিস্টার সাইয়্যেদুল হক সুমন তাঁর ফেসবুক পেজে বলেন, পৃথিবীর মধ্যে নিকৃষ্ট এবং বর্বর জাতি হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বী, যাদের ধর্মের কোনো ভিত্তি নেই। মনগড়া বানানো ধর্ম। হয়তো দু-একটি খবর নিউজে প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া আরও অনেক ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায় তাদের নৃশংসতার আড়ালে।
আরজিতে আরও বলা হয়, ব্যারিস্টার সুমন গত ১৯ এপ্রিল সনাতন ধর্ম ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে মিথ্যা, অশ্লীল ও চরম আপত্তিকর মন্তব্য করেন। যার ফলে হিন্দুসমাজ তথা গোটা জাতির মধ্যে এ নিয়ে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। আসামির এ রকম আচরণ এবং সোশ্যাল মিডিয়ার অশ্লীল অবমাননাকর ও অরুচিপূর্ণ বক্তব্যর ফলে রাষ্ট্র ও হিন্দুসমাজের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে। আসামির এ ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদানের ফলে সাধারণ জনগণ নীতিভ্রষ্ট, অসৎ হতে উদ্যত হওয়ার ফলে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন হওয়ার আশঙ্কা আছে।
এ বিষয়ে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হলে মামলা দায়ের করা তাঁর সাংবিধানিক অধিকার। ফেসবুকের যে অ্যাকাউন্ট থেকে এটি ছড়ানো হয়েছে, সেটা আমার নামে ভুয়া আইডি ছিল।’
ব্যারিস্টার সুমন আরও বলেন, ‘এ মামলার মাধ্যমে প্রমাণিত, হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এ দেশে স্বাধীনভাবে বসবাস করছে এবং আদালতে তারা ন্যায়বিচার পাচ্ছে।’
এর আগে গতকাল ব্যারিস্টার সুমন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করলে বিচারক জিয়াউল হাসান তা খারিজের আদেশ দেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ১৭ জুলাই হোয়াইট হাউসে তাঁর কার্যালয়ে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহিষ্ণুতার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন ধর্মীয় নেতা ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন।
এতে বাংলাদেশি পরিচয় দিয়ে এক নারী ট্রাম্পকে বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। এখানে (বাংলাদেশে) প্রায় ৩৭ মিলিয়ন (তিন কোটি ৭০ লাখ) হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ডিসঅ্যাপেয়ার (নিখোঁজ) হয়ে গেছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই। এখনও সেখানে (বাংলাদেশে) ১৮ মিলিয়ন (এক কোটি ৮০ লাখ) সংখ্যালঘু মানুষ রয়েছে। আমার অনুরোধ, দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশ ছাড়তে চাই না। শুধু আমাদের (বাংলাদেশে) থাকতে সাহায্য করুন। আমি আমার বাড়ি হারিয়েছি। তারা আমার বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। তারা আমার জমি কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু কোনো বিচার হয়নি।’
এ সময় ট্রাম্প জানতে চান, ‘কারা জমি দখল করেছে? কারা বাড়ি দখল করেছে?’ জবাবে ওই নারী বলেন, ‘মুসলিম মৌলবাদী গ্রুপ এগুলো করছে। তারা সব সময় পলিটিক্যাল শেল্টার (রাজনৈতিক ছত্রছায়া) পায়।’