ব্রাজিলে স্কুলে সহিংসতা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এর পেছনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ভূমিকা খুব স্পষ্ট। তাই মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রাম ব্যবহার সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এসব সহিংসতার সঙ্গে একটি নব্য নাৎসি গ্রুপের সংশ্লিষ্টতার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বরে স্বস্তিকাচিহ্নধারী এক ব্যক্তি পরপর দুটি স্কুলে হামলা চালিয়ে চারজনকে হত্যা করে। এসপিরিতো সান্তো রাজ্যের ছোট্ট শহর আরাক্রুজ-এর সেই ঘটনার পর নব্য নাৎসিদের তৎপরতার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুরু করে পুলিশ।
তেমন একটি গ্রুপকে সক্রিয় দেখা যাওয়ায় মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছিল। সে বিষয়ে যথেষ্ট সহযোগিতা না করার অভিযোগেই টেলিগ্রাম ব্যবহার সাময়িকভাবে স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে এসপিরিতো সান্তোর আদালত। বুধবার এক নির্দেশনায় রাজ্যের কেন্দ্রীয় আদালতের বিচারক বলেন, ‘‘পুলিশ কর্তৃপক্ষ যেসব তথ্য উপস্থাপন করেছে তাতে টেলিগ্রাম যে তদন্তে সহযোগিতা করছে না তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।'' এ কারণে টেলিগ্রাম ব্যবহার সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার পাশাপাশি পুলিশকে তদন্ত শেষ করার তাগিদও দিয়েছে আদালত।
চলতি মাসের শুরুর দিকে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু মানুষের তৎপরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। মন্ত্রিপরিষদ এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের কথা তার সরকারের বিবেচনায় রয়েছে।
গতি ১৮ এপ্রিল এক বৈঠকে ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলেক্সান্দ্রে দে মোরায়েস বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটা অনেক ক্ষেত্রে ‘নো ম্যান'স ল্যান্ড' এর মতো, সেখানে বেআইনি কাজ করে, বেআইনি কথাবার্তা বলেও যেন পার পাওয়া যায়। তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগ সংক্রান্ত প্রবিধান প্রণয়ন করা এখন সময়ের দাবি।
ব্রাজিলের স্কুলে সহিংসতা বৃদ্ধির বিষয়ে একটি গবেষণা করেছেন সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডানিয়েল কারা। সেই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ২০০২ সাল থেকে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে ব্রাজিলের বিভিন্ন স্কুলে কমপক্ষে ১৬টি হামলা বা সহিংসতা সংঘটিত হয়েছে। ১৬টির মধ্যে চারটি ঘটেছে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের শেষ ছয় মাসে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে