ব্রিজ নির্মাণ করার জন্য বেধে দেয়া সময় শেষ হলেও শুরুই হয়নি কাজ। এখন সাময়িক বাঁশ দিয়ে তৈরি করা সেতু দিয়ে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন শিক্ষার্থীরাসহ পথচারীরা। ফলে দুর্ঘটনার শঙ্কায় আতঙ্কিত শিক্ষক- অভিভাবকরা। এমন চিত্র নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের সাজিউড়া বাজার থেকে গোগবাজার সড়কের তেতুলিয়া নামক স্থানে।
গুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিজটির উত্তর পাশেই রয়েছে তেতুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। চলচলকারী জানান, বাঁশের মাছাটি ভেঙে যেকোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ১৫৬ মিটার চেইনেজে মাত্র ১৬ মিটার দীর্ঘ আরসিসি গার্ডারের একটি ব্রিজ নির্মাণের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু পাইল-বোরিং প্রতিবন্ধকতায় এখন পর্যন্ত কাজই শুরু করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। পুরাতন ব্রিজটা ভেঙে বাঁশের মাছা করে দেয়া হলেও কয়েক মাসেই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে সেটিও।
তেতুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসলিমা, তানজিনা, অনয় ও মোবারক জানান, অনেক দিন যাবৎ ব্রিজটি ভাঙা। এই ভাঙা ব্রিজের ওপর দিয়ে আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে এবং বাজারে আসা-যাওয়া করি। বর্ষাকালে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করি। তাই আমরা চাই এই খালের ওপর দ্রুত একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। তাতে আমরা ঝুঁকি মুক্তভাবে আসা-যাওয়া করতে পারি।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মোতাহার হোসেন জানান, সাজিউড়া বাজারের এই সড়কে প্রতিদিন অটোরিকশা, ট্রলিসহ বিভিন্ন যানবাহন ও মানুষজন চলাচল করেন। ব্রিজের আশপাশের শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে হয় এই স্কুলে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮০ জন। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা স্কুল ছাড়াও সাজিউড়া বাজারে এই মাছার ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে আসা-যাওয়া করে।
তিনি আরো বলেন এই স্কুলের মাঠে ব্রিজ নির্মাণের সামগ্রী দীর্ঘ দিন যাবত পড়ে আছে। স্কুলের শিক্ষার্থীরা ঠিকভাবে খেলাধুলা করতে পারেনা। তাই শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে। তিনি ব্রিজটির নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানান। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্রিজটি নির্মাণের জন্য এলজিইডি হতে গত বছরের ২ নভেম্বর নির্মাণ কাজ শুরুর কার্যাদেশে চলতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর কাজ শেষের সময় বেধে দেয়। এটি সিএএফডিআরআইআরপি’র আওতায় প্যাকেজের একটি কাজ যার মূল্য ধরা আছে ১ কোটি ৩১ লাখ ১০ হাজার টাকা।
কেন্দুয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. আল আমিন সরকার জানান, ব্রিজটি নির্মাণের সমস্যাগুলো নিয়ে নেত্রকোনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীকে লিখিতভাবে জানানোর পর নির্বাহী প্রকৌশলী স্যার কাজটি বাস্তবায়নে সিদ্ধান্তের পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রকল্প পরিচালক ‘ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন’ শীর্ষক প্রকল্প, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে অনুরোধ করে চিঠি পাঠান। আশা করছি ব্রিজের কাজটি বাস্তবায়নে দ্রুত ব্যবস্থা হবে।