ব্লেড দিয়ে ছাত্রের শরীর কেটে মরিচ গুঁড়া দিলেন শিক্ষক

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি |

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় পড়া না শেখায় এক শিশুর শরীর ব্লেড দিয়ে কেটে মরিচের গুঁড়া লাগিয়ে শাস্তি দিয়েছেন এক শিক্ষক। নির্মম এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে উপজেলার বৈরাগের পূর্ব গুয়াপঞ্চক এলাকার ইমাম আজম (রহ.) ইন্টারন্যাশনাল হিফজুল কোরআন একাডেমি মাদরাসায়। এমনকি নির্যাতনের পর ঘটনা ধামাচাপা দিতে ওই শিক্ষার্থীকে ১৮ দিন মাদরাসায় আটকে রেখে ভয় দেখান ওই শিক্ষক।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে ওই শিশুর অভিভাবকরা মাদরাসায় এলে ঘটনাটি জানাজানি হয়। নির্যাতনের শিকার ওই শিশুর নাম ইশফাত মামুন রিয়াদ। সে ওই মাদরাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী। এদিকে খবর পেয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আবু হানিফকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।

ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, ১৯ দিন আগে যথাসময়ে পড়া শিখতে ব্যর্থ হয় রিয়াদ। এ সময় হানিফ তাকে প্রথমে বেত্রাঘাত করে। পরে শরীরের অংশবিশেষ ব্লেড দিয়ে কেটে মরিচের গুঁড়া লাগিয়ে দেয়। এ সময় শিশুটি ব্যথায় চিৎকার করলে তার মুখ কাপড় দিয়ে চেপে ধরে হানিফ। এরপর শিশুটিকে ১৮ দিন মাদরাসায় আটকে রাখা হয়। গত বৃহস্পতিবার শিশুটি বাড়িতে গেলে তার গায়ে কাটা দেখে অভিভাবকরা রিয়াদের কাছে এর কারণ জানতে চান। প্রথমে কিছু না বললেও পরে নির্যাতনের বিষয়টি মা-বাবাকে জানায় শিশুটি।

গতকাল বিকেলে মাদরাসার অন্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও এই হুজুরের নির্যাতনের আরও ঘটনা প্রকাশ করে। ইয়াছিন আরাফাত নামে এক শিক্ষার্থীর হাতের আঙুলে আগুন দেওয়ার ঘটনাও বর্ণনায় বেরিয়ে আসে এ সময়।

শিশু রিয়াদ জানায়, পড়া শিখতে পারিনি। তাই হুজুর ব্লেড দিয়ে কেটে মরিচের গুঁড়া দিয়েছেন। এ ঘটনা কাউকে বললে আরও মারবেন বলেও ভয় দেখিয়েছেন।

রিয়াদের বড় ভাই আসাদুজ্জামান ছোটন বলেন, আমার ভাই বৃহস্পতিবার বাড়িতে গেলে তার গায়ে কাটা দেখে জিজ্ঞাসা করি। সে কিছু বলতে ভয় পাচ্ছিল। পরে সে জানায়, হুজুর তার গা ব্লেড দিয়ে কেটে মরিচের গুঁড়া দিয়েছে।

এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক আবু হানিফ নির্যাতনের বিষয়টি স্বীকার করে বলে, আমার দোষ হয়েছে আমি ক্ষমা চাই। ভবিষ্যতে আর করব না।

আনোয়ারা থানার ওসি মির্জা মোহাম্মদ হাসান বলেন, হেফজ মাদরাসায় শিক্ষার্থী নির্যাতনের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে অভিযুক্ত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অভিভাবককে থানায় নিয়ে আসি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
জোর করে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পদত্যাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা হুঁশিয়ারি - dainik shiksha জোর করে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পদত্যাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা হুঁশিয়ারি রাজনীতি করি না, ভবিষ্যতেও করবো না: ঢাবির নতুন ভিসি - dainik shiksha রাজনীতি করি না, ভবিষ্যতেও করবো না: ঢাবির নতুন ভিসি চার তারিখের মধ্যে মাদরাসা শিক্ষকদের এমপিওর আবেদন - dainik shiksha চার তারিখের মধ্যে মাদরাসা শিক্ষকদের এমপিওর আবেদন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক আমানুল্লাহ - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক আমানুল্লাহ দীপু-টিপু-রতন সিন্ডিকেটের ঘুষের সাম্রাজ্য - dainik shiksha দীপু-টিপু-রতন সিন্ডিকেটের ঘুষের সাম্রাজ্য এনসিটিবির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি বৈষম্যবিরোধীদের - dainik shiksha এনসিটিবির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি বৈষম্যবিরোধীদের কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028090476989746