যশোর জেলার মনিরামপুরের পল্লীতে শিশু কিশোরদের খেলাধূলার একমাত্র সাথী বড়শি (ছিপ) দিয়ে মাছ শিকার। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তারা বাড়িতে পড়ালেখার পাশাপাশি অবসর সময়ে খেলাধূলার সঙ্গী হিসেবে বড়শি দিয়ে মাছ শিকারের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। খাল-বিলে দীর্ঘ সময় জমে থাকা পানিতে মাছ শিকার খুবই মজার বলেই জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা ।
মনিরামপুর উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা রয়েছে। বিভিন্ন শ্রেণি পেশার অন্ততঃ ৬ লাখ মানুষের বসবাস এখানে। বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনা ভাইরাসের নীল ছোবলে সারাবিশ্বের মত থমকে আছে উপজেলাবাসীর জীবনযাত্রা। বিশেষ করে কিন্ডারগার্টেন, স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিশু কিশোর শিক্ষার্থীরা প্রায় ৮ মাস ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় গৃহবন্দী। এ পরিস্থিতিতে কিছুটা আনন্দ পেতে শিশু কিশোররা সকাল-দুপুর কিংবা পড়ন্ত বিকেলে ডোবা-নালা, খাল, কুড়, বিল ও নদীতে বড়শি দিয়ে (ছিপে) মাছ শিকারে মেতে উঠেছে।
সাধারণত বর্ষা মৌসুমের পর খাল-বিল, নদী-জলাশয়ে পানি কম হওয়ার সাথে সাথে এই দৃশ্য চোখে পড়ে। উপজেলার লাউড়ী ও ধলিগাতী বিলে সরেজমিন গেলে দেখা যায়, স্থানীয় শিশু কিশোররা ওই বিলের পানিতে বড়শি দিয়ে মাছ শিকারে মেতে উঠেছে। প্রতিটি বড়শিতে দেশি পুঁটি, কই, পাবদা, টেংরা আবার কোন কোন সময়ে তেলাপিয়া ও ছোট ছোট রুই মাছ ধরা পড়ছে।
উপজেলার ধলিগাতী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র ফয়সাল হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, বড়শি দিয়ে মাছ ধরা (শিকার) খুবই আনন্দদায়ক। তার সাথে ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র রিফাত হোসেন, রফিকুল ইসলাম, কিন্ডারগার্টেন ছাত্র আল আমিন, ২য় শ্রেণির ছাত্র রহমত আলী, ৫ম শ্রেণির ছাত্রী নুসরাত, আরাফাত হোসেন এবং ৭ম শ্রেণির ছাত্র রিপন হোসেনও এসেছিলেন মাছ শিকারে।
তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, স্কুল বন্ধ থাকায় ক্লাসের অবসরে সহপাঠীদের সাথে খেলার সুযোগ নেই। তাই সকাল-দুপুরে বাড়িতে পড়ালেখা শেষে প্রায়ই বিকেলে বড়শি নিয়ে মাছ ধরতে (শিকারে) আসা হয়।
সুন্দলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোতাহার হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বড়শি দিয়ে মাছ শিকার একটি আনন্দদায়ক শখের কাজ। প্রাচীনকাল থেকেই গ্রাম-মহল্লার ছোট-বড় সবাই শখের বসে এ কাজে অভ্যস্থ ছিল। এ বছর খাল-বিলে দীর্ঘ সময় পানি জমে থাকায় বড়শিতে মাছ ধরার আনন্দ উপভোগ করছে সবাই।