বয়সের কারণে বিদ্যালয়ে ফেরার সুযোগ অবরুদ্ধ সুমনের

দিনাজপুর প্রতিনিধি |

দিনাজপুরে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ভয়াবহ বন্যায় ডুবে যায় দিনাজপুর জেলা। হাজার হাজার ঘরবাড়ি ভেঙে ভেসে যায়। সে বছরের বন্যার ছাপ হয়তো প্রকৃতিতে বিদ্যমান নেই, কিন্তু ক্ষত রয়ে গেছে অনেকের মধ্যে। এমনই একজন মতিউর রহমান সুমন (১৮)। পরিবারকে বাঁচাতে তাঁকে দিনমজুরি করতে হয়। বন্ধ হয়ে যায় তাঁর লেখাপড়া।

সুমনের বাড়ি দিনাজপুর সদর উপজেলার আউলিয়াপুর গ্রামে। জন্ম ২০০২ খ্রিষ্টাব্দের ২ জুলাই। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় পাস করেন। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে সদরের ঘুঘুডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজে অষ্টম শ্রেণিতে পড়তেন। ওই বছরের ১২ আগস্ট তাঁদের মাটির তৈরি শত বছরের বাড়ি বানের পানিতে ভেঙে মিশে যায়। এই ক্ষতি পোষাতে তিনি পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। তিনি এখন বিদ্যালয়ে ফিরতে চান, কিন্তু ১৭ বছরের ঊর্ধ্বে কেউ অষ্টম শ্রেণিতে পড়তে পারবে না, এমন নিয়মে তাঁর বিদ্যালয়ে ফেরার সুযোগ অবরুদ্ধ।

সুমনের মা ছাবেকুন নাহার জানান, তাঁর দুই সন্তানের মধ্যে সুমন ছোট। মেয়েকে মাধ্যমিকের পড়াশোনা করানোর পর বিয়ে দিয়েছেন। সুমনকে নিয়ে ছিল তাঁর দুচোখ ভরা স্বপ্ন। সে স্বপ্ন মলিন করে দিয়েছে বন্যা। অশ্রুসিক্ত মা একপর্যায়ে বলেন, ‘ছেলে পড়াশোনায় ফিরতে চায়। তাই বিদ্যালয়ে গিয়েছি একাধিকবার, কিন্তু সন্তানকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে পারিনি। উল্টো প্রধান শিক্ষকের কথা শুনে ফিরতে হয়েছে।’

ঘুঘুডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন মোবাইল ফোনে বলেন, ‘তার বয়স বেশি হয়ে গেছে। আমি তাকে ভর্তি নিতে পারব না।’

এই বিষয়ে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মো. তোফাজ্জুর রহমান বলেন, ‘আমরা তাকে পড়াশোনার সুযোগ করে দিতে চাই।’

দিনাজপুর শহরের ঈদগাহ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘আমরা সংবাদপত্রে কত শিরোনাম দেখি, মা-মেয়ে একসঙ্গে, দাদা-নাতি একসঙ্গে, ছোট বোনের সঙ্গে বড় বোন, ছেলের সঙ্গে বাবা জেএসসি, এসএসসি পাস করছেন। তাহলে সুমন কেন জেএসসি পরীক্ষা দিতে পারবে না?’

দিনাজপুর সদর উপজেলার কাশিপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লোকমান হাকিম বলেন, ‘বোর্ড অনুমতি দিলে আমার স্কুলে ওকে ভর্তি নিতে চাই।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034570693969727