সরকারি স্কুলে ভর্তির লটারি তালিকাতে নেত্রকোনা পৌরশহরে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে একজন তিনবার ও আঞ্জুমান আদর্শ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে (বালক) আরেকজনের নাম দুইবার পাওয়া গেছে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য নির্বাচিত দুই শিক্ষার্থীর জন্ম নিবন্ধন নম্বর ভিন্ন ভিন্ন। পক্ষান্তরে তালিকায় তাদের নাম ও ছবি এবং অভিভাবকের নাম ও মোবাইল নম্বর একই পাওয়া গেছে। বালক বিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও আঞ্জুমান আদর্শ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য একজন ছাত্রীর নামও নির্বাচিতদের তালিকাতে রয়েছে।
তালিকায় না থাকা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অভিযোগ, জালিয়াতি আশ্রয় নিয়ে একাধিক জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে পছন্দের স্কুলে ভর্তির জন্য অভিভাবকরা এমন কাজটি করেছেন।
বালিকা বিদ্যালয়ে দিবা শাখায় তিনবার নাম আসা ছাত্রীর নাম আনিকা আক্তার। তার বাবা মো. আব্দুল কুদ্দুছ মিয়া ও মা মোছা. তাসলিমা আক্তার। তারা শেরপুরে জেলায় থাকেন। অন্যদিকে বালক বিদ্যালয়ে দিবা শাখায় দুইবার নাম আসা ছাত্র আবির আনোয়ার। তার বাবা মাজাহার আনোয়ার বাচ্চু ও মা হাসনা আক্তার (কাজল)। নেত্রকোনা পৌরশহরের পশ্চিম কাটলী এলাকায় তাদের বাস। ওই দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে তাদের অবস্থান জানা গেছে।
তালিকায় নাম না থাকা অভিভাবক সুমা পারভীন ও রোকেয়া ইসলাম এবং অন্য স্কুলের তালিকায় থাকা কাঙিক্ষত স্কুলে না পাওয়া শিক্ষার্থীর অভিভাবক ফারজানা আক্তার ও মো. আ. রহিম একজনের নাম তিনবার থাকার বিষয়ে তারা বলেন, আমাদেরকে বঞ্চিত করা হয়েছে। অভিযুক্ত অভিভাবকরা জালিয়াতি করে তাদের সন্তানের নামে পৃথক পৃথক জন্মনিবন্ধন ব্যবহার করে ভর্তিতে আবেদন করিয়েছেন। এ ধরণের কাজ না করলে আমাদের সন্তানের নাম লটারি তালিকার থাকার সম্ভাবনা ছিলো। এতে অপেক্ষামান তালিকায় থাকা ভর্তি প্রত্যাশারা লাভবান হবেন। তারা এমন জালিয়াতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি কামনা করেন।
আনিকা আক্তারের মাতা তাসলিমা আক্তার মুঠোফোনে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শেরপুরে থাকেন তারা। গাড়ীতে আছেন বলে সংযোগ কেটে দেন। পরে ফোন দিলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। অন্যদিকে আবির আনোয়ারের মাতা হাসনা আক্তার জানান, তিনি ময়মনসিংহ জিলা ও আঞ্জুমান স্কুলে দুই শাখায় আবেদন করেছেন। তবে একাধিক জন্মসনদের সংগ্রহের বিষয়ে তারা কোন মন্তব্য করেননি।
নেত্রকোনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপ্না রানী সরকার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, সিদ্ধন্ত না আসা পর্যন্ত তিনবার নাম আসা ছাত্রীর ভর্তি আপাতত নেয়া হবে না।
আঞ্জুমান আদর্শ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আকলিমা খাতুন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, দুইবার নাম আসা ছাত্রের একটি বাতিল বলে গণ্য হবে।
জানতে চাইলে নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি জানিয়েছেন। একাধিক জন্মনিবন্ধন ব্যবহারকারী অভিযুক্ত অভিভাবকদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয়ের অনুমতির ওপর নির্ভর করবে ভর্তি হওয়া না হওয়ার বিষয়টি। একজন অভিভাবক তার সন্তানের নামে তিনটা জন্মনিবন্ধন করাতে পারেন না। এটা বেআইনি। তাদের আবেদন বাতিল করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।