জমি নিয়ে বিরোধের জেরে রেজা সাইদ আল মামুন নামে এক কলেজ শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর থেকে নিহতের ভাই ও দুই ভাতিজা পলাতক রয়েছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ও কালিয়াকৈর থানার ওসি।
রোববার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার শ্রীফলতলী ইউনিয়নের বাজেবলিয়াদী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মামুন উপজেলার সাজনধারা এলাকার আফাজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি উপজেলা চন্দ্রা এলাকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান প্রভাষক ছিলেন।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আফাজ উদিনের ছয় ছেলে ও চার বোনের মধ্যে পাঁচ নম্বর ছিলেন রেজা সাইদ আল মামুন। তার এক মেয়ে-দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার। বড় মেয়ে সূচনা আক্তার সূচীকে বিয়ে দিয়েছেন।
দীর্ঘদিন ধরে ওই শিক্ষকের সঙ্গে তার ভাইদের জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। রবিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার বাজেবলিয়াদী এলাকায় বংশাই নদীর ধারে নিজের ফসলি জমি দেখতে যান ওই শিক্ষক। সেখানে গিয়ে তার জমিতে কচুরিপানা দেখতে পান। জমিতে কেন কচুরিপানা ফেলা হলো জানতে চাইলে ক্ষিপ্ত হন তার বড় ভাই মজিবর রহমান। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মজিবর ও তার ছেলে সুমন তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে গাজীপুরের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজে নিয়ে যায় এলাকাবাসী। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মামুনকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ঘাতক ভাই মজিবর রহমান ও তার ছেলে সুমন পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী ও কালিয়াকৈর থানার ওসি এ এফ এম নাসিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সেখানে ছুটে যান কলেজের সহকর্মী ও স্বজনসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ। এ সময় ওই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। পরে রাত ৮টার দিকে নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
নিহতের মেয়ে সূচনা আক্তার সূচী বাবার লাশের পাশে কান্নারত অবস্থায় বলেন, ‘আব্বু তুমি আদর্শ পিতা, আদর্শ শিক্ষক। তুমি মিথ্যা বলা শিখাওনি, আব্বু তুমি বলেছে অন্যায় সহ্য করবা না। আব্বু তোমাকে যারা পিটিয়ে মেরে ফেলেছে, তাদের ছাড়ব না। আমরা তোমার হত্যাকারীদের বিচার করব।’
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম জানান, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এক ভাই আরেক ভাইকে খুন করেছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।