ভাঙনে দূরে বিদ্যালয়, প্রধান শিক্ষকের কারসাজি

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে এক বছর আগে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোনো সুফল পায়নি স্থানীয়রা। তা ছাড়া নদীভাঙনের শিকার হওয়ায় বিদ্যালয়টি এলাকা থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে প্রধান শিক্ষকের সুবিধামতো জায়গায় স্থানান্তরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে এ বিদ্যালয়ে ভর্তি স্থানীয় অনেক শিক্ষার্থীর ঝরে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তিস্তা নদী বেষ্টিত বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের একমাত্র বিদ্যাপীঠ বিদ্যানন্দ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ১৯৯১ সালে স্থাপিত হয়। ওই বছরই বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন লোকনাথ বর্মণ। সহকারী শিক্ষক রয়েছেন ১০ জন। বিদ্যালয়ের ৯০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে উপবৃত্তি পাচ্ছে ১৯ জন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি গত বছর জুন মাসে নদীর ভাঙনের মুখে পড়লে পাশের তৈয়ব খাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমিতে অস্থায়ীভাবে স্থানান্তর করা হয়। তখন বিদ্যালয়ের জন্য জেলা প্রশাসক নতুন ঘর নির্মাণে ৩০ হাজার টাকা ও প্রয়োজনীয় টিন অনুদান দেন। স্থানান্তরের সময় প্রধান শিক্ষক লোকনাথ বর্মণের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের তিন লাখ টাকা মূল্যের পাঁচটি রেইনট্রি, ১০টি মেহগনি, ১০টি ইউক্লিপটাসসহ ২৫টি গাছ কর্তন ও বিদ্যালয়ের পুরনো ভবনের ২০ হাজার ইট বিক্রি করে সব টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া তাঁর সুবিধামতো বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে নাজিম খাঁ ইউনিয়নের তালতলা নামক জায়গায় স্থানান্তর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ওই ইউনিয়নের শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তৈয়ব খাঁ গ্রামের বাসিন্দা আমিনুর ইসলাম ও আব্দুল হাই জানান, প্রধান শিক্ষক তাঁর স্বার্থের কারণেই বিদ্যালয়টি অন্য ইউনিয়নে নিয়ে গেছে। বিদ্যালয়টির জন্য এলাকার অনেকেই জমি দিতে চেয়েছিল। কিন্তু প্রধান শিক্ষক জমি নেননি।

বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রীপা রানী, জেসমিন আক্তার, সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মাইদুল জানায়, স্কুল দূরে হওয়ায় তাদের অনেকেই স্কুলে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। তারা এখন মা-বাবার সঙ্গে ক্ষেত-খামারে কাজ করছে।

এ বিষয়ে বিদ্যানন্দ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লোকনাথ বর্মণ বলেন, কাছাকাছি কোথাও জমি পাওয়া যায়নি। তাই অন্যত্র বিদ্যালয় স্থানান্তর করা হয়েছে। তা ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। বিদ্যালয়ের কাজেই সব টাকা ব্যয় করা হয়েছে। বিষয়টি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা অবগত রয়েছেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফ-উজ-জামান সরকার বলেন, এক ইউনিয়ন থেকে অন্য ইউনিয়নে বিদ্যালয় স্থানান্তরে বিধি-নিষেধ আছে কি না তাঁর জানা নেই। বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ রাশেদুল হক প্রধান জানান, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন।

 

সৌজন্যে: কালের কণ্ঠ


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
যৌন হয়রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি - dainik shiksha যৌন হয়রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি অভিযুক্ত শিক্ষা সাংবাদিকদের পক্ষে জোর তদবির - dainik shiksha অভিযুক্ত শিক্ষা সাংবাদিকদের পক্ষে জোর তদবির কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে যৌ*ন হয়*রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি - dainik shiksha যৌ*ন হয়*রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী আজ - dainik shiksha বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী আজ তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034339427947998