ভাতা পেলেও ইউনিফর্ম পরেন না রাবির কর্মচারীরা

দৈনিকশিক্ষাডটকম, রাবি |

দৈনিকশিক্ষাডটকম, রাবি : স্বল্প বেতন, নিজেদের অনাগ্রহ ও প্রশাসনিক তদারকির অভাবে বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরেন না রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কর্মচারী। পোশাকের জন্য বিভিন্ন মেয়াদে ৬৫০০ ভাতা পান তারা।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী, টেকনিক্যাল পদের কর্মচারী এবং ৪র্থ শ্রেণি থেকে ৩য় শ্রেণিতে পদোন্নতি পাওয়া কর্মচারীরা এই ভাতা পায়। কিন্তু সরাসরি ৩য় শ্রেণিতে নিয়োগ হলে এই ভাতা প্রযোজ্য নয়।

উপ-রেজিস্ট্রার (প্র.) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীর মোট পদ আছে ১৯০৯ টি। নিয়োগ না থাকায় ৭৫২ টি পদ শূন্য আছে। গত ৩০ জুন পর্যন্ত এই দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী মোট কর্মচারী আছেন ১১৫৭ জন৷ ৪র্থ শ্রেণিতে কর্মরত এই সকল কর্মচারী, ৪র্থ শ্রেণি থেকে ৩য় শ্রেণিতে পদোন্নতি পাওয়া ২৫০-৩০০ জন কর্মচারী এবং ট্যাকনিকাল পদের কর্মচারীরা ২ সেট পোশাকের জন্য বাৎসরিক ৩০০০ টাকা এবং ৩ বছরে ১ বার শীতকালীন পোশাকের জন্য  ৩৫০০ টাকা পেয়ে থাকেন। তবে সরাসরি ৩য় শ্রেণিতে নিয়োগ পাওয়া কর্মচারীরা এই ভাতা পান না। 

ইউনিফর্ম না পড়ার কারণ জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীরা এই প্রতিবেদককে জানান, তারা যে বেতন পান তা খুবই স্বল্প। সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হয়। তাই এই টাকায় তারা ইউনিফর্ম বানানোর কাজে ব্যবহার না করে সাংসারিক কাজে ব্যবহার করেন। 

তারা আরও জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোন চাপ নেই। তাই তারা ইউনিফর্ম পড়েন না এবং ইউনিফর্মের বিষয়ে তাদের নিজেদের কোন আগ্রহ নেই।  

৪র্থ শ্রেণি থেকে ৩য় শ্রেণিতে পদোন্নতি পাওয়া একাধিক কর্মচারী দাবি করেন, পোশাক ভাতা পেলেও তাদের এই পোশাক পরতে হয় না। হবে না। শুধু ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের জন্যই এই ইউনিফর্মের বাধ্যবাধকতা আছে। এ বিষয়ে উপ-রেজিস্ট্রার (প্র.) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তাদের এমন দাবি সঠিক নয়। যেহেতু সরকার তাদের পোশাকের জন্য ভাতা দেন তাই তাদের এই পোশাক পড়তে হবে। বাধ্যবাধকতা আছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সংগঠন সাধারণ কর্মচারী সমিতি ট্রেট ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল আজিজ এই বিষয়ে বলেন, প্রায় সকল কর্মচারী ইউনিফর্ম পরেন। এখন তো শীতের সময়। মোটা কাপড়ের প্রয়োজন। অনেক ক্ষেত্রে ভিতরে পড়ে থাকে কিন্তু বুঝা যায় না। কর্মচারীরা সকলেই পোশাক পড়ে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, পোশাকের জন্য তাদের যে অর্থ দেওয়া হয়৷ তা সেই কাজেই ব্যয় করা উচিত। বহুদিন ধরেই ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের ইউনিফর্মের বিষয়টাতে শিথিলতা আছে। এবং সংশ্লিষ্ট আরও কিছু কারণে এই বিধি ভঙ্গ হয়ে আসছে। আমরা এ বিষয়টি নিয়ে কর্মচারীদের সাথে কথা বলেছি। 

তিনি আরও বলেন, যেহেতু সরকার এই সংক্রান্ত ভাতা দেয় তাই এটা পড়া উচিত। আমরা ইচ্ছে করলেই একদিনে তাদের ইউনিফর্ম পড়াতে সফল হবো না। কিন্তু আমরা তাদের বুঝাতে চেষ্টা করেছি যে পোশাকগুলো অবশ্যই পড়তে হবে। বছরে ২ সেট পোশাকের জায়গায় বছরে অন্তত ১ সেট বানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই। বিশ্ববিদ্যালয়কে সুন্দর করতে গেলে সুনির্দিষ্ট ড্রেস পরে নিজের কাজ করে ফেলা উচিত। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
আইনের মারপ্যাঁচে অনিশ্চিত ১৯তম শিক্ষক নিবন্ধন - dainik shiksha আইনের মারপ্যাঁচে অনিশ্চিত ১৯তম শিক্ষক নিবন্ধন ‘ঢাবির ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু হচ্ছে শিগগিরই’ - dainik shiksha ‘ঢাবির ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু হচ্ছে শিগগিরই’ হাই-টেক পার্কের নাম হবে জেলার নামে: উপদেষ্টা নাহিদ - dainik shiksha হাই-টেক পার্কের নাম হবে জেলার নামে: উপদেষ্টা নাহিদ দীপু মনির নামে আরেক মামলা, আসামি ৬০০ - dainik shiksha দীপু মনির নামে আরেক মামলা, আসামি ৬০০ স্কুল-কলেজে বিশৃঙ্খলা : কোথাও জবরদস্তি কোথাও পালিয়ে থাকা - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বিশৃঙ্খলা : কোথাও জবরদস্তি কোথাও পালিয়ে থাকা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0045638084411621