ভারতে পড়তে এসে বঞ্চনা ও বৈষম্যের অভিযোগ তুলে অনশনে বসেছেন এক বাংলাদেশি ছাত্র। ভারতের স্বনামধন্য কলকাতার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেই দীর্ঘ ২০ ঘণ্টার বেশি অনশন করছেন আল আমিন হোসেন নামের এক বাংলাদেশি ছাত্র।
জানা গেছে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরের বাসিন্দা আল আমিন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউটাউন ক্যাম্পাসের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। মূলত ভারতের আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় গেমসে অংশগ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতপার্থ্যের জেরে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে অনশনে বসেছে এই বাংলাদেশি ছাত্র। তার অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশী ছাত্র হওয়ায় তার সঙ্গে বঞ্চনা ও বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে।
আল আমিনের অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুসারে বহিরাগত বা বিদেশি ছাত্ররাও আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। সেই হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে বক্সিং বিভাগে প্রতিযোগী হিসেবে অংশগ্রহণ করতে চেয়েছিল সে। যদিও তাকে অংশগ্রহণ করতে বাধা দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা পক্ষ। এক্ষেত্রে তার অভিযোগের তীর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে।
আল আমিন বলেন, "আমি বিগত কয়েক মাস ধরে টানা প্র্যাকটিস করছি, সম্প্রতি ৪ তারিখ আমাকে জানানো হয় বিদেশি ছাত্র হিসেবে আমি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবো না, কিন্তু আমি অল ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি রুলস দেখেছি, সেখানে এমন কোনো বিষয় উল্লেখ নেই। তাই আমার দাবি যতক্ষণ না পূর্ণ হচ্ছে আমি অনশন চালিয়ে যাব।"
তিনি আরও বলেন, চলতি মাসের ১ তারিখ গেমস সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট অধ্যাপককে ফোন করে তিনি জানতে পারেন তিনি ট্রায়ালে থাকছেন না। কিন্তু পরে জানা যায় ঐদিন সন্ধ্যে সাতটার সময় ছাত্রদের প্র্যাকটিস চলাকালীন ভিডিওর মাধ্যমে ট্রায়াল সম্পন্ন করেছেন ওই অধ্যাপক। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে এমন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ন্যায্য বিচার দাবি করে তার অনুরোধ তার দাবি খতিয়ে দেখা হোক। তিনি বলেন "যদি আইনগত বাধা থাকে আমাকে দেখান আমি নিজে থেকে সরে যাবো, কিন্তু যদি আমার সেই অধিকারটা থাকে তার ব্যবস্থা করা হোক।"
এদিকে আল আমিনের অনশনের খবর পেয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদের তরফে তার অনশন তুলে নেয়ার জন্য রীতিমতো হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে তাকে। ছাত্র সংগঠনটির দাবি আল আমিনের এমন পদক্ষেপের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদমাধ্যম প্রবেশ করলে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অস্বস্তির বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।
বর্তমানে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ক্যাম্পাসে প্রায় ২০ জন বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বাসিন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক ছাত্র আসিফ ইকবাল বলেন ছাত্র সংগঠন তরফে অনশন তুলে নিতে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে তবে আমরা আল আমিনের পাশে আছি।