পরীক্ষার খাতায় একটি মাত্র বানান ভুলের কারণে শিক্ষকের হাতে প্রাণ হারাল এক স্কুল শিক্ষার্থী। এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন ওই শিক্ষক। তাকে খুঁজে বের করতে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদিকে এমন ঘটনার প্রতিবাদে শুরু হয়েছে তীব্র বিক্ষোভ।
ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়া এ ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তর প্রদেশের অরাইয়া জেলায়। জানা গেছে, ‘দলিত’ সম্প্রদায়ের ওই শিক্ষার্থীর নাম নিখিল দোহরে। সে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
ভারতে সমাজের বঞ্চিত ও শোষিত শ্রেণিকে বর্ণনা করার জন্য ‘দলিত' শব্দটি ব্যবহার করা হয়। যদিও এ নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে।
পুলিশের কাছে করা অভিযোগে ওই শিক্ষার্থীর বাবা জানান, চলতি মাসের শুরুতে হাইস্কুলের একটি পরীক্ষায় ‘Social’ (সামাজিক) শব্দটির বানান ভুল লেখায় নিখিলকে একটি রড দিয়ে আঘাত করার পাশাপাশি লাথি মারতে থাকেন অশ্বিনী সিং নামে স্কুলটির একজন শিক্ষক। মারধরের একপর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে নিখিল। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, শিক্ষকের মারধরে গুরুতর আহত ১৫ বছর বয়সী নিখিল সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) উত্তর প্রদেশের একটি হাসপাতালে মারা গেছে। এর পরপরই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন অভিযুক্ত শিক্ষক।
মহেন্দ্র প্রতাপ সিং নামে স্থানীয় এক পুলিশ কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘ওই শিক্ষক পলাতক রয়েছেন। তবে আমরা শিগগিরই তাকে গ্রেফতার করব।’
এদিকে নিখিলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর অরাইয়া জেলায় সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ দাহ করার আগেই অভিযুক্ত শিক্ষকের গ্রেফতারের দাবি উঠেছে। এ ঘটনাকে ‘জাতিভিত্তিক ঘৃণামূলক অপরাধ’ বলে অভিহিত করছেন অনেকে।
পুলিশ জানায়, নিখিলের মৃত্যুর পর বিক্ষোভ জানাতে সোমবার শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। কিন্তু এসময় তারা পুলিশের একটি গাড়িতেও আগুন দেয়। এরপর ১২ জনের বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বর্ণবাদ এবং বর্ণভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে ভারতে। সরকারি তথ্যই বলছে, দেশটিতে গড়ে প্রতি ঘণ্টায় পাঁচটি বর্ণবাদ-ভিত্তিক অপরাধ সংঘটিত হয়।