ভারতে বিক্ষোভ যেন থামছেই না। কলকাতায় এক নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে দেশজুড়ে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের মধ্যেই নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে মুম্বাইয়ের কাছের বলদাপুর শহরে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দেশটিতে চার বছর বয়সী দুই শিশু শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে বুধবার (২১ আগস্ট) দ্বিতীয় দিনের মতো শহরটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ সেখানকার সব স্কুল ও ইন্টারনেট-সেবা বন্ধ করে দিয়েছে।
ভারতীয় মিডিয়া বলছে, কর্তৃপক্ষ স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি যেকোনো ধরনের জমায়েত বা বিক্ষোভ ঠেকাতে দ্বিতীয় দিনের মতো ইন্টারনেট-সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এই বিক্ষোভকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ সিন্ধ বলেছেন, অভিযোগটির বিচার দ্রুত বিচার আদালতে হতে পারে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, দুই শিশু শিক্ষার্থীকে হয়রানির অভিযোগে ইতোমধ্যে স্কুলের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনা সামনে আসার পর, ন্যায়বিচারের দাবিতে বিক্ষোভকারীরা মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) থানে জেলার বলদাপুর রেলওয়ে স্টেশনে কয়েক ঘণ্টা রেললাইন অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে স্থানীয় পুলিশ লাঠিপেটা করে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা পাথর নিক্ষেপ করলে অন্তত ১৭ জন পুলিশ এবং আটজন রেল পুলিশ আহত হন। পরে সহিংসতার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ৭২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শহরে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে অতিরিক্ত পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে।
জানা গেছে চার বছর বয়সী ওই দুই শিশু বলদাপুর শহরের সামনের সারির একটি প্রাক্-প্রাথমিক স্কুলে পড়ে। ওই স্কুলে ছেলে-মেয়ে সবাই একসঙ্গে পড়ে। অভিযোগে বলা হয়, চলতি মাসের ১২ ও ১৩ তারিখ অক্ষয় সিন্ধে নামের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী ওই দুই শিশুকে যৌন হয়রানি করেন। মেয়েদের শৌচাগারে এ ঘটনা ঘটে। সেখানে তেমন নারী তত্ত্বাবধায়কও ছিলেন না। অভিযুক্তকে গত ১ আগস্ট চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়।
এই দুই শিশুর একজন বাড়িতে গিয়ে তার মা-বাবার কাছে স্পর্শকাতর জায়গায় ব্যথা ও তার সঙ্গে কী হয়েছে, তা খুলে বলে। ওই অভিভাবক অবাক হন, যখন তারা জানতে পারেন একই অভিজ্ঞতা আরেক শিশুরও হয়েছে। এ নিয়ে ১৬ আগস্ট রাতে থানায় অভিযোগ করা হয়। এরপর অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় স্কুলের অধ্যক্ষ ও তিনজন স্টাফকে বরখাস্ত করেছে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়ে আসছেন।