উচ্চশিক্ষায় ভালো ফল করেও শুধুমাত্র সফট স্কিলের ঘাটতির কারণে গ্র্যাজুয়েটরা চাকরি পাচ্ছেন না বলেও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা দীপু মনি। তিনি বলেছেন, আমরা একটি কথা বারবার শুনতে পাই। চাকরিপ্রত্যাশী আর চাকরিদাতাদের মধ্যে বিস্তর ফারাক। চাকরি প্রার্থীরা বলেন তারা চাকরি পাচ্ছে না আবার চাকরি দাতারা বলেন তারা যোগ্য লোক পাচ্ছেন না। আমাদের একজন ভালো গ্র্যাজুয়েট চাকরি পাচ্ছেন না, অথচ পাশের দেশের একজন শিক্ষার্থী একটি সার্টিফিকেট কোর্স করে চাকরি পাচ্ছেন। কেনো পাচ্ছেন? কোথায় আমাদের ঘাটতি? ঘাটতি সফট স্কিলস-এ, ক্রিটিক্যাল থিকিং স্কিল, কোলাবরেশন স্কিল এগুলো আমাদের শিক্ষার্থীদের শেখানো হয় না। এসব দক্ষতা শিক্ষার্থীদের অর্জন করতে হবে।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে উত্তরা ইউনিভার্সিটির সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে উদ্দেশ করে মন্ত্রী আরো বলেন, যে যে বিষয় পড়ুক, তার ভাষার দক্ষতা থাকতে হবে, আইসিটির দক্ষতা থাকতে হবে, অন্ট্রোপ্রেনারশিপ জানতে হবে। সবাই চাকরি করবে তাও নয়, আবার সবাই উদ্যোক্তা হবেন তাও নয়। কিন্তু দক্ষতা থাকতে হবে। শিখতে শেখাটাই এখন শিক্ষার বড় বিষয়।
মন্ত্রী বলেন, সরকার জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার পরিবর্তে দক্ষতাভিত্তিক ও প্রায়োগিক শিক্ষায় গুরুত্বারোপ করছে। আর সেই লক্ষ্যে নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হয়েছে। এ নতুন শিক্ষাক্রমে মুখস্থ নির্ভর নয় অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখবে। শেখাটা চার দেয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। শিক্ষককের ভূমিকাতেও আসছে পরিবর্তন। শিখন হবে সক্রিয়। আমাদের শিক্ষার্থীরা অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখনের মাধ্যমে দক্ষ ও যোগ্য হয়ে উঠবে। এসময় শিক্ষার্থীদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
মন্ত্রী আরো বলেন, এ বছর প্রাথমিকে প্রথম শ্রেণি, মাধ্যমিকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শেণিতে এ শিক্ষাক্রম চালু হয়েছে। আগামী বছর প্রাথমিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণি এবং মাধ্যমিককে অষ্টম ও নবম শ্রেণি আর তার পরের বছর ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রাথমিকে চতুর্থ ও পঞ্চম আর মাধ্যমিকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত অর্থাৎ ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত আর ২০২৭ খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হবে।
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উত্তরা ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মো বদরুল ইমাম ও উপাচার্য ড. ইয়াসমীন আরা লেখা।