বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমুহে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ দেয়া হয়। এই আদেশ পালনের ক্ষেত্র দেশব্যাপী ভিন্ন ভিন্ন চিত্র পরিলক্ষিত হয়। যেমন:
১। বেশির ভাগ আদেশ বিলম্বে পাওয়ায় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই তা দায়সারা ভাবে পালন করে। আবার কোন কোন প্রতিষ্ঠান প্রতিযোগিতার আয়োজনই করে না।
২। প্রতিযোগিতায় পুরস্কার প্রদান করা হবে কি না; কিংবা কী ধরনের পুরস্কার প্রদান করা হবে, তার কোন সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আদেশে থাকে না। এক্ষেত্রে দেখা যায় যে, অনেক শিক্ষা প্র্রতিষ্ঠান মাতৃভাষাদিবস/ স্বাধীনতাদিবস/ শিশুদিবস/ শোকদিবস/ বিজয় দিবসে ক্রোকারিজ পুরস্কার দিচ্ছে। স্কুল, কলেজ, মাদরাসায় বঙ্গবন্ধু বিদ্বেষী ও বিভিন্ন ইসলামিক বই পুরস্কার দিচ্ছে। এ সকল বইয়ের মাধ্যমে জঙ্গিবাদের প্রচার হচ্ছে কিনা তা তদারকিও হচ্ছে বলে মনে হয় না।
যথেচ্ছ ও যেনতেনভাবে অনুষ্ঠান করে বা না করে জাতীয় দিবস উদযাপনের ফলে ভাব-গাম্ভীর্য বজায় থাকছে না এবং এর মর্মার্থ শিক্ষার্থীদের অনুধাবন করানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে, শিক্ষার্থীদের এ সম্পর্কিত শিক্ষা পূর্ণতা পাচ্ছে না। অর্থাৎ যে উদ্দেশ্য সাধারণ শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হচ্ছে, সে উদ্দেশ্য বাস্তবে ততটা সফল হচ্ছে না।
এমতাবস্থায় জাতীয় দিবস উদযাপন বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশে প্রতিযোগিতার আয়োজন ও পুরস্কার প্রদানের ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা থাকা আবশ্যক। যেমন: মাতৃভাষা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে ভাষা আন্দোলন ও তৎসংশ্লিষ্ট বই, স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার ইতিহাস ও তৎসংশ্লিষ্ট বই, শিশু দিবস ও শোক দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও তৎসংশ্লিষ্ট বই উপহার দেয়ার জন্য আদেশ দেওয়া উচিত।
তদুপরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বার্ষিক প্রতিযোগিতা এবং অন্যান্য সকল প্রতিযোগিতাই পুরস্কার হিসেবে বই প্রদানের জন্য সরকারি ও বেসরকারি ভাবে বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে দেওয়া উচিৎ বিশেষ উৎসাহ। একমাত্র ভাল বই-ই হওয়া উচিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পুরস্কার ও উপহার । এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বেশি বেশি বই পাবে, বেশি বেশি বই পড়বে এবং বিক্রি হবে বেশি বেশি বই। সচ্ছল হবে লেখক ও প্রকাশক। জ্ঞানে-গুনে সমৃদ্ধ হবে জাতি ।
লেখক : অধ্যক্ষ , কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা