ভিকারুননিসার শাখা খোলার অনুমতির কাগজপত্র এবং বিগত ৫ বছরের অডিট রিপোর্ট তলব করেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদারকে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে সব কাগজপত্র তিন কার্য দিবসের মধ্যে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে লিখিতভাবে জমা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া ভিকারুননিসার কতটি শাখা রয়েছে এবং ৮ম ও ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সংখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) ঢাকা বোর্ড সূত্র দৈনিক শিক্ষাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার নবম-দশম ও একাদশ শ্রেণির অনুমোদন নেই। নিম্ন-মাধ্যমিক অর্থাৎ ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অনুমোদন রয়েছে। অথচ চলতি বছর বোর্ডের অনুমোদন ছাড়াই বসুন্ধরা শাখায় একাদশ শ্রেণি চালু করেছে। আর কয়েকবছর যাবত শাখাটিতে চলছে নবম-দশম শ্রেণি।
প্রতিষ্ঠানটির মূল ক্যাম্পাসের প্রতিটি শ্রেণিতে (প্রভাতী ও দিবায়) মোট ৯টি সেকশন রয়েছে। সে হিসাবে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৯০টি সেকশন। এছাড়া বসুন্ধরা ও আজিমপুরের প্রতি শ্রেণিতে ৬টি হিসাবে ৬০টি এবং ধানমন্ডিতে ৪টি করে মোট ৪০টি সেকশন রয়েছে। এছাড়া ইংরেজি ভার্সনে ৪টি সেকশন রয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণি তো আছেই। স্কুলের কোনো কোনো ক্লাসরুমে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৮০ জনেরও বেশি। ফলে এসব শ্রেণিতে পাঠদান হয় না বললেই চলে। শ্রেণিকক্ষে গাদাগাদি করে বসতে হয় ছাত্রীদের। পাঠদানের পরিবেশই থাকে না শ্রেণিকক্ষে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক দৈনিক শিক্ষাকে জানান, একসাথে এত সংখ্যক শিক্ষার্থীকে পাঠদান সম্ভব নয়। তিনি প্রতি সেকশনে নির্ধারিত সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তির পরামর্শ দেন। ভর্তিতে অভিভাবকদের চাপ এবং গভর্নিং বডির অতি আগ্রহের কারণেই শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে মূল ক্যাম্পাস ছাড়াও ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে বসুন্ধরায়, ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে ধানমন্ডিতে এবং ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে আজিমপুরে শাখা চালু হয়। ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শিক্ষা ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান ভিকারুননিসাকে আর কোনও শাখার অনুমোদন না দেয়ার নির্দেশ দেন। স্কুল পরিচালনা নীতিমালায় কোনো শাখা ব্যবস্থা চালুর বিধান না থাকলেও ভালো স্কুল বিবেচনায় ‘স্কুলের শাখা’ অনুমোদন দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা বোর্ডের উপ-কলেজ পরিদর্শক রবিউল আলম।
চলতি শিক্ষাবর্ষেও দুই শতাধিক অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে ভিকারুননিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজে এমন অভিযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে পরিচালনা কমিটির সভাপতিসহ একাধিক সদস্য মূল ভূমিকা রাখছেন। বিভিন্ন মহল থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরে এমন একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছিল বছরের শুরুতেই।