মন্ত্রণালয়-বোর্ড-দুদকে অভিযোগভিকারুননিসায় অবৈধ ভর্তি নিয়ে তোলপাড়

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজে আবারও অবৈধভাবে শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটি ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। ইতিমধ্যে অভিভাবকদের পক্ষ থেকে আনিসুর রহমান আনিস নামের একজন এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ ও সংশ্লিষ্ট তথ্যপ্রমাণাদি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার বরাবর জমা দিয়েছেন।

জানা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের বিজ্ঞপ্তি ছাড়া একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীর ৩ সন্তানকে অবৈধভাবে  ভর্তি করা হয়েছে। চলতি বছর প্রধান শাখা ও আজিমপুর শাখায় তিনজন ছাত্রীকে গোপনে ভর্তি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রায় প্রতি বছর আসন খালি থাকা সাপেক্ষে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিভিন্ন শ্রেণিতে লটারি বা ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ছাত্রী ভর্তি করে থাকে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতি শিক্ষাবর্ষেই শিক্ষার্থী ভর্তি সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করে থাকে। সেই প্রজ্ঞাপন অনুসরণ করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী ভর্তি করে থাকে। ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে আসন খালি না থাকায় দ্বিতীয় থেকে তদূর্ধ্ব শ্রেণিতে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি। ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করলেও পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও  শিক্ষকদের সহযোগীতায় বিভিন্ন শ্রেণিতে অবৈধভাবে অর্থের বিনিময়ে তিন জন শিক্ষার্থী এ বছর ভর্তি করা হয়।

শিক্ষার্থীর ভর্তির আবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, শিক্ষক প্রতিনিধি আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ, শিক্ষক প্রতিনিধি চাঁদ সুলতানা, প্রধান শাখার দিবা বিভাগের প্রধান মো. শাহ আলম খান, আজিমপুর শাখা প্রধান শাহরীমা চৌধুরীর সুপারিশে এই তিনজন শিক্ষার্থীকে অবৈধভাবে ভর্তি করা হয়েছে। 

জানা যায়, ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজে ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। ২০১৯ সালের ১৬ জানুয়ারি ভিকারুননিসায় বাড়তি শিক্ষার্থী ভর্তির খবর পেয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে পরিদর্শনে যান দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দুই কর্মকর্তা। 

গত ৬ বছরে ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজে ভর্তিসহ নানান বিষয়ে হাইকোর্টে দেড় শতাধিক রিট করা হয়েছে। ভর্তি বাণিজ্যের বিষয়টি বারবার সামনে আসলেও এ বিভাগটি দুর্নীতিমুক্ত করা যায়নি। শূন্য আসন থাকলে সেটার জন্য ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার বিধান থাকলেও যারা অবৈধভাবে ছাত্রী ভর্তি করেছেন তারা ‘প্রতিষ্ঠানের প্রচলিত বিধি অনুযায়ী’ ভর্তির সুপারিশ করেছেন।

আজিমপুর শাখা প্রধান শাহরীমা চৌধুরী বলেন, আমার সহকর্মীর সন্তানকে মানবিক কারণে সুপারিশ করেছি অধ্যক্ষ বরাবর। এখন অধ্যক্ষ যদি বিধি মোতাবেক হয় তাহলে গ্রহণ করবে, আর বিধি মোতাবেক না হলে গ্রহণ করবেন না। আমিতো ভর্তির অনুমোদন দেইনি। দিয়েছেন উনি (অধ্যক্ষ)। এটা উনি ভালো বলতে পারবেন। 

অভিভাবকদের  একজন বলেন, বিজ্ঞপ্তি ছাড়া অধ্যক্ষও তার সন্তানকে ভর্তি করাতে পারেন না। কিন্তু এখানে বিজ্ঞপ্তি ছাড়া ছাত্রী ভর্তি করা হয়েছে, যা অন্যায়। এভাবে অবৈধভাবে ভর্তি  করালে প্রতিষ্ঠানের সম্মান ক্ষুন্ন হয়। আমি অভিভাবকদের পক্ষ থেকে বলছি।’

ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী বলেন, আমি তখন দায়িত্বে ছিলাম না। আমি এ বিষয় কিছু জানিনা। তাছাড়া আমাকে ফরমালি কেউ জানায়নি।  


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে - dainik shiksha অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে দুই শব্দে অধ্যক্ষের পদত্যাগ! - dainik shiksha দুই শব্দে অধ্যক্ষের পদত্যাগ! বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে পাকিস্তান - dainik shiksha বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে পাকিস্তান বিএনপি নির্বাচিত হলে গুম প্রতিরোধে আইন করব: তারেক - dainik shiksha বিএনপি নির্বাচিত হলে গুম প্রতিরোধে আইন করব: তারেক ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইসহাক আলীর মৃত্যু শ্বাসরোধে: মেঘালয় পুলিশ - dainik shiksha ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইসহাক আলীর মৃত্যু শ্বাসরোধে: মেঘালয় পুলিশ ঢাবিতে যোগ দিলেন চাকরিচ্যুত অধ্যাপক ড. সাইফুল - dainik shiksha ঢাবিতে যোগ দিলেন চাকরিচ্যুত অধ্যাপক ড. সাইফুল কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028121471405029