ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ, স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

পঞ্চগড় প্রতিনিধি |

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় ‘ভিডিও প্রকাশের ভয়ে তিন মাস ধরে ধর্ষণের শিকার’ এক কিশোরী ‘আত্মহত্যা’ করেছে।

তেঁতুলিয়া সদর ইউনিয়নের কালারাম জোত গ্রামে মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে।

নবম শ্রেণির ছাত্রী দিনমজুরের মেয়ে রহিমা আক্তার সোনিয়া তেঁতুলিয়া কাজী শাহাবুদ্দিন বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়ত।

স্থানীয় রাজন ও আতিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করছেন সোনিয়ার স্বজনরা।

সোনিয়ার মামা ফারুক অভিযোগ করেন, প্রায় ৩ মাস আগে সোনিয়া তার অসুস্থ মায়ের জন্য ওষুধ কিনতে বাজারে যাচ্ছিল। এ সময় সহায়তার কথা বরে রাজন মোটরসাইকেলে তুলে তাকে উপজেলা সদরে আতিকের বাসায় নিয়ে যায়।

আতিক
আতিক

“সেখানে রাজন তাকে ধর্ষণ করে। এ সময় আতিক মোবাইল ফোনে

তা ভিডিও ধারণ করে। পরে ওই ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে আতিক ধর্ষণ করে।”

সোনিয়ার বরাত দিয়ে ফারুক বলেন, এরপর ওই দুজনই অনলাইনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ভিডিও প্রকাশ করা ও মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে বার বার ধর্ষণ করে আসছিল।

রাজন রাজন রাজন হাসপাতালে (উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ার্ড বয়) চাকরি করে এবং আতিক স্থানীয় বাজারে ফ্ল্যাক্সিলোডের ব্যবসা ও বাংলালিংকের কাস্টমার কেয়ারে কাজ করে বলে ফারুক জানান।
ফারুক বলেন, “গত সোমবার সোনিয়া ঘটনাটি আমাকে ও তার মা সেলিনা বেগমকে জানায়। পরে আমরা রাজন ও আতিকের সঙ্গে কথা বলি।

“কিন্তু পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে কোচিং করতে যাওয়ার সময় সোনিয়াকে তারা আবার একই হুমকি দেয়। ওইদিনই বাসায় ফিরে সোনিয়া গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।”

রাজন
রাজন

সোনিয়ার বাবা জাহেরুল ইসলাম পাথর শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালান।

জাহেরুল ইসলাম  বলেন, “বুধবার রাতে ধর্ষণ এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে রাজন ও আতিকের নামে তেঁতুলিয়া থানায় মামলা করতে যাই; কিন্তু পুলিশ মামলাটি রেকর্ড করেনি। আসামিও ধরেনি।”

তেঁতুলিয়া কাজী শাহাবুদ্দিন বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক নাজিমউদ্দিন বলেন, রাজন ও আতিক ব্ল্যাক মেইল করে সোনিয়াকে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করে আসছিল। সোনিয়া সে পথ থেকে সরে আসার চেষ্টা করেছিল।

“কিন্তু বার বার ভিডিও ফুটেজ প্রকাশের ভয় দেখিয়ে তাকে বাধ্য করেছে আত্মহত্যা করতে।”

আতিক আতিক পুলিশ এ ঘটনায় যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে না অভিযোগ করে তিনি আসামিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
তাদের প্রতিবেশী রওশনারা বেগম বলেন, “১৪ বছরের শিশুকে তারা ফুসলিয়ে বিপদে ফেলেছে। আমারও মেয়ে আছে। তারা আরও কোনো শিশুকে এমন করতে পারে।”

ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।

তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, “এখানে ইতিপূর্বে এমন ঘটনা ঘটেনি। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিচার চাই। মেয়েটা চলে গেছে, কিন্তু উপযুক্ত বিচার পেলে দেশে আইন আছে বিচার আছে এ শান্তনাটুকু নিয়ে বাঁচতে পারব।”

তেঁতুলিয়া থানার ওসি সরেস চন্দ্র বলেন, সোনিয়ার আত্মহত্যার ঘটনায় একটি ইউডি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে লাশের ময়নাতদন্ত রিপোট পাওয়ার পরে যথাযথভাবে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ - dainik shiksha চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার - dainik shiksha কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার ৫ বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস, তাপমাত্রা নিয়ে সুখবর - dainik shiksha ৫ বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস, তাপমাত্রা নিয়ে সুখবর বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034389495849609