ভুয়া তথ্য দিয়ে স্কুল সরকারিকরণের চেষ্টা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি |

ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করে কৌশলে বিদ্যালয়কে সরকারিকরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। এমন অভিযোগ উঠেছে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশার বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের আমানীপুর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। 

গত বছরের বার্ষিক প্রাথমিক বিদ্যালয় শুমারিতে (ই-তথ্য সংগ্রহ) যে তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে তার সাথে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। 
 
শুমারিতে উল্লেখ করা হয়, বিদ্যালয়ের জন্য রয়েছে আটটি চেয়ার, পাঁচটি টেবিল, ৩০টি বেঞ্চ, তিনটি চক বোর্ড ও একটি আলমারি। বিদ্যালয়ের নামফলকসহ চারকক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন রয়েছে। রয়েছে নিরাপদ পানীয়জলের ব্যবস্থা। আছে প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য সুসজ্জিত শ্রেণিকক্ষ। মৌলিক তথ্যসমূহ প্রদর্শিত আছে জনসমক্ষে। ওয়াশ ব্লক ছাড়া রয়েছে টয়লেটের ব্যবস্থা। আছে খেলার মাঠ। চালু আছে স্কাউট ও গার্ল গাইডসের কার্যক্রম। 

এই জায়গাতে স্কুল ভবন থাকার কথা খাকলেও বাস্তবে না নেই | ছবি : সংগৃহীত

কিন্তু সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের জন্য নির্ধারিত ভূমি ফাঁকা পড়ে আছে। সেখানে কোনো ভবনের অস্তিত্ব নেই। তবে একটি উঁচু ভিটে দেখা গেছে। বিদ্যালয়ের সভাপতি দাবিদার নাছির উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে টিনের একটি ছোট ঘরে দেখা যায়, এক শিক্ষক তৃতীয় শ্রেণির (শিক্ষকের ভাষ্যমতে) কয়েকজন শিক্ষার্থীকে পড়াচ্ছেন। 

নয়নমণি নামে ওই শিক্ষক জানান, তিনি নিয়মিত বিদ্যালয়ে পাঠদান করেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা নাকচ করে দেয়। কাগজেপত্রে ২০০১ থেকে আব্দুল গণি প্রধান শিক্ষক ও ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে সালমা আক্তার, নয়নমণি ও নাসিমা আক্তার সহকারী শিক্ষক হিসেবে এ বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন; কিন্তু তারা কেউ বিদ্যালয়ে নিয়মিত নন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সেখানে এক সময় একটি টিনশেড ঘর নির্মাণ করা হয়েছিল; কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগে সে ঘরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া শুমারিতে সরকারিকরণের জন্য যেসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে তার সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল নেই।

আমানীপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হেলিম বলেন, ‘আমানীপুর বিদ্যালয়ের কোনো ভবন নেই। অথচ পাশের নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা আবদুল গণি নিজেকে প্রধান শিক্ষক দাবি করে ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করে বিদ্যালয়টি সরকারিকরণের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন।’

আবদুল গণি বলেন, ‘ইন্টারনেটে বিদ্যালয়ের তথ্য আপলোড করতে গিয়ে ভুল হয়ে থাকতে পারে। ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত আমাদের বিদ্যালয়টির ইএমআইএস কোড আছে। বিদ্যালয়ের জন্য নির্ধারিত জায়গায় শ্রেণিকক্ষ ও উপকরণ ছিল, কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ে তা নষ্ট হয়েছে। তাই ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নাসির উদ্দিনের বাড়িতে একটি ঘরে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।’

বিদ্যালয়ের সভাপতি দাবিদার নাছির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ের কোনো ভবন নেই। কে বা কারা এ তথ্য দিয়েছে তা জানি না।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘তথ্য গোপন কর কেউ বিদ্যালয় সরকারিকরণের চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা - dainik shiksha চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? - dainik shiksha স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার - dainik shiksha কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034739971160889