ভুয়া বিল বানিয়ে স্কুলের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

গাজীপুর প্রতিনিধি |

ভুয়া বিল-ভাউচার বানিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীমা আক্তারের বিরুদ্ধে। বিল ভাউচার দেখিয়ে টাকা তুলে নেয়া হলেও স্কুল সংস্কারের কোন কাজ করা হয়নি। স্কাউট ও ক্ষুদে চিকিৎকের পোশাক কেনার বিল দেখিয়া বরাদ্দ নেয়া হলেও সেগুলোও কেনা হয়নি। স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের নজরে এসেছে বিষয়টি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস অভিযোগটি খতিয়ে দেখছে।

মাওনা উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

স্থানীয় বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বিদ্যালয়ের কিছু পুরানো দরজা ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়লে দরজার মেরামত, শ্রেণিকক্ষ সু-সজ্জিতকরণ এবং মেরামত ছাড়াও শিক্ষার্থীদের স্কাউট পোষাক ও ক্ষুদে চিকিৎসক পোষাকের সরকারি বরাদ্দ আসে। ওই বরাদ্দকৃত টাকায় বিদ্যালয়ের পুরো উন্নয়ন কাজ না করেই ওই প্রধান শিক্ষিকা ভুয়া বিল-ভাউচার বানিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, গত বছর গাজীপুর জেলা পরিষদ থেকেও বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য এক লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। সেখান থেকে বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক পুরো কাজ না করেই বিল ভাউচার বানিয়ে প্রধান শিক্ষিকা অর্ধলক্ষ টাকা উত্তোলন করেন। ভাউচার জমা না দেয়ায় বাকি টাকা এখনও  উত্তোলন করতে পারেনি। 

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান এ বিষয়ে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বিদ্যালয়ের মেরামত কাজ, আনুসাঙ্গিক খরচ ও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য প্রায় এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। জানুয়ারির প্রথম দিকে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুন নাহার রুটিন ওয়ার্কের অংশ হিসেবে ওই বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনে গিয়ে তিনি দেখেন, যে কাজের জন্য টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তার কাঙ্খিত কাজ হয়নি। অথচ তাকে কাজের ভাউচার দেখানো হয়েছে। এছাড়া ইতোপূর্বে তার দুই সহকর্মী শারমিন আক্তার ও শিউলী সুলতানাও উপজেলা শিক্ষা অফিসে তার বিরুদ্ধে কাজ-কর্মে আন্তরিক নয় বলে অভিযোগ দেন। বিষয়টি তদন্ত করে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। 

তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও জানান, কাজ শুরুর করার আগেই কেনা-কাটার ভাউচার দেয়ার নিয়ম রয়েছে। এবরারও ওই স্কুলের কাজের জন্য দুই লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছে। কিন্তু ওই প্রধান শিক্ষিকা কোন কাজ শুরু করেননি বলে তা ছাড় করা হয়নি।

সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিও) নুরুন নাহার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে গিয়ে সদ্য কাজের কোন আলামত পাওয়া যায়নি এবং তার নানা অনিয়মও ধরা পড়েছে। এছাড়া সেদিন স্কাউট ও ক্ষুদে চিকিৎকের পোশাকও তিনি দেখাতে পারেননি। তার এসব অনিয়মের প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে এবং তা উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জমা দেয়া হয়েছে।

প্রধান শিক্ষিকা শামীমা আক্তার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, আগে চাহিদা এবং ভাউচার জমা দিয়ে বরাদ্দ পাওয়ার পর কাজ শুরু করা হতো। কিন্তু চাহিদা জমা দেয়ার পরও হঠাৎ জরুরি প্রয়োজনে অন্য কাজ করতে গিয়ে চাহিদার সঙ্গে কাজের মিল থাকেনি। কিন্তু কাজ করা হয়েছে। এছাড়া স্কাউট পোষাক ও ক্ষুদে চিকিৎসক পোষাক দর্জির কাছ থেকে আন্তে দেরি হওয়ায় সেদিন তা শিক্ষা কর্মকর্তাকে দেখাতে পারেননি বলেও দাবি করেন তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028879642486572