রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার রামচন্দ্রপুর গ্রামের সাব্বির আহমেদ শাকিল (৪৯) নিজেকে পরিচয় দেন সচিব হিসেবে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা। এভাবেই গত ৫ বছর যাবৎ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতারণা করে আসছিলেন তিনি।
অবশেষে ময়মনসিংহে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার ফাঁদ পেতে ডিবি পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন এই ভুয়া সচিব। গত রোববার রাতে ময়মনসিংহ নগরীর টাউনহল এলাকা থেকে শাকিলকে গ্রেফতার করে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরে অভিযুক্ত শাকিলকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, মাস খানেক আগে নগরীর আকুয়া এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন শাকিল। ময়মনসিংহ নগরীর মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডের সভাপতি মো. নজরুল ইসলামের ছেলেকে ১৫ লাখ টাকায় সরকারি চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণার ফাঁদ পাতেন তিনি। নজরুল ইসলাম টাকা দেয়ার আগে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাউসার-ই-জান্নাতের সঙ্গে। পরে রোববার দুপুরে কাউন্সিলর সচিব পরিচয়ধারী শাকিলের সঙ্গে নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে দেখা করেন। সেখানে নিজেকে সচিব পরিচয় দিয়ে নিজের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ও অফিস সহায়ক পদে লোক নিবেন বলে জানান শাকিল। এ সময় নিজেকে রাজশাহীর একজন বিএনপি সরকারের সাবেক এমপির ছেলে বলে পরিচয় দেন। একই সঙ্গে তার বোন অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূত বলে জানান তিনি। প্রতারণার বিষয়টি কাউন্সিলর কাউসার-ই-জান্নাত বুঝতে পেরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে ডিবি পুলিশ শাকিলকে আটক করে।
শাকিলের কাছ থেকে আইনমন্ত্রীর সচিবের পরিচয়পত্র, আইনমন্ত্রীর নামে সিল, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নামে বানানো সিলসহ বিভিন্ন কার্ড ও পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়। এছাড়া বিবাহ ও তালাক নিবন্ধনের নিয়োগপত্রও উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পরিবহণ নেতা মো. নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা করেন।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন বলেন, শাকিল অন্তত ৫ বছর যাবৎ নিজেকে সচিব পরিচয় দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে প্রতারণা করছিলেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে চাকরি দেয়ার ফাঁদ পেতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতেন। তাকে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তিনি আরো কাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন এবং তার সঙ্গে কারা জড়িত তা বের করা হবে।