উন্নত, নিশ্চিত ও নিরাপদ জীবনের আশায় প্রতিবছর ছোট নৌকায় করে উত্তাল ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করেন হাজার হাজার মানুষ। তবে ঝূঁকিপূর্ণ এ যাত্রায় ভাগ্য সবার সহায়ক হয় না। নৌকা ডুবে, ঝড়ের কবলে পড়ে সাগরেই সলিল সমাধি হয় অনেকের।
ইউরোপগামী এসব মানুষকে সমুদ্র যাত্রা থেকে নিবৃত রাখতে অব্যাহতভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না অভিবাসন প্রত্যাশীদের এ ঢল। যার ফলে প্রায় প্রতিদিনই সমুদ্রে ডুবে পৃথিবীর বুক থেকে চিরতরে হারিয়ে যাচ্ছেন কেউ না কেউ।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) জানিয়েছে, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ৮৬ হাজার মানুষ সমুদ্র পথে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন। তবে এই একই সময়ের মধ্যে ইউরোপ প্রবেশের মোহে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ।
শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার নিউইয়র্ক অফিসের হাইকমিশনার রুবেন মেনিকদিওয়েলা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, এ বছর নতুন করে যে ১ লাখ ৮৬ হাজার শরণার্থী ইউরোপে প্রবেশ করেছেন— তার মধ্যে ৮৩ শতাংশ— অর্থাৎ প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার জন শুধুমাত্র ইতালিতে গেছেন। এছাড়া ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে গ্রিস, স্পেন, সাইপ্রাস এবং মাল্টাতেও গেছেন উল্লেখ সংখ্যক মানুষ।
জাতিসংঘের এ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর সাগরে ডুবে বেশি সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি বলেছেন, ’শুধুমাত্র ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত/নিখোঁজ হয়েছেন। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে একই সময় এ সংখ্যাটি ছিল ১ হাজার ৬৮০ জন। অর্থাৎ মৃতের সংখ্যাটি অনেক বড় লাফ দিয়েছে।’
তিনি জানিয়েছেন, ইউরোপ যাত্রায় সমুদ্রে ডুবে মানুষের মৃত্যুর ‘কোনো শেষ’ তারা দেখতে পাচ্ছেন না।
এই কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, এ বছর তিউনিশিয়া থেকে ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করেছেন ১ লাখ ২ হাজার মানুষ। যা গত বছরের তুলনায় ২৬০ শতাংশ বেশি। এছাড়া লিবিয়া থেকে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়েছেন ৪৫ হাজারেরও বেশি মানুষ।
সূত্র: আল জাজিরা