ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা

আসাদুল ইসলাম, দৈনিক শিক্ষাডটকম |

আসাদুল ইসলাম, দৈনিক শিক্ষাডটকম: নতুন পাঠক্রমের আওতায় নবম শ্রেণীর জীবন ও জীবিকা বইয়ে যুক্ত করা ভূমি আইন সংশ্লিষ্ট পাঠ আশার আলো দেখাচ্ছে। বইটির ১২ নম্বর থেকে ২১ পৃষ্ঠা পর্যন্ত এ সংক্রান্ত তথ্য সন্নিবেশিত করা হয়েছে। এখানে ধারণা দেয়া হয়েছে- দলিল, সাব রেজিস্ট্রি অফিস, খতিয়ান, ভূমি অফিস, নামজারি, ভূমি উন্নয়ন কর, খাজনা, জমির ম্যাপ, বিভিন্ন প্রকার জরিপ ইত্যাদি সম্পর্কে। এসব অধ্যয়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা স্কুল পর্যায়েই ভূমি সংক্রান্ত ধারণা পাবেন।

এ বইয়ে আরো সংযুক্ত করা হয়েছে- ভূমি ক্রয়ের আগে ও পরের করণীয় সম্পর্কে, অনলাইনে খাজনা প্রদান ও  অনলাইনে নামজারির আবেদনের পদ্ধতির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে। এর ফলে এ অধ্যায় পাঠের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা জমি ক্রয়ের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী বিষয় সম্পর্কে জানতে পারছেন। যদি শিক্ষার্থীরা এ পাঠ বাস্তব জীবনে কাজে লাগাতে পারেন তবে ভূমি সংক্রান্ত অনেক জটিলতা কমে আসবে।

ভূমি সমস্যার অন্যতম হলো নামজারি বা মিউটেশন। জমির মালিকানা পরিবর্তনের পর নতুন মালিকের নামে নামজারি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। অনলাইনে বাড়িতে বসেই যে নামজারির আবেদন করা যায়, আবেদনটি কোন পর্যায়ে আছে তা জানা যায়- এসবের সিংহভাগই মানুষের আজানা। ফলে নামজারির জন্য মানুষকে ছুটতে হয় দালালদের কাছে, গুণতে হয় অতিরিক্ত টাকা। সমস্যা সমাধানে বেগ পেতে হয়। নতুন পাঠক্রমের ভূমি সংক্রান্ত অধ্যায় পাঠের মাধ্যমে নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে যাবতীয় তথ্য জানতে পারবেন ও জানাতে পারবেন। 

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাকিল আহমেদ দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আমাদের দেশে ভূমি বিষয়ক জটিলতার অন্যতম কারণ হলো সচেতনতা তৈরি না হওয়া। যেমন মিউটেশনের খরচ ১১৫০ টাকা। এটা হয়তো ঢাকা শহরে সাইনবোর্ডের মাধ্যমে বলে দেয়া আছে। কিন্ত গ্রাম পর্যায়ে এটা তো নাই, তাছাড়াও মানুষ হয়তো জানেও না।  কোথায় গেলে আইনের প্রটেকশন পেতে পারেন সেটাও হয়তো জানেন না। সুতরাং স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা যদি এটা জানেন তবে তারা বাবা-মায়ের সঙ্গে আলোচনা করতে পারবেন। তারাও জানতে পারবেন।

তিনি বলেন, ভূমির আরেকটি জটিল বিষিয় হলো জরিপ। জমি জরিপের সময় অনেকের নাম ভুল হয়ে যায়। জরিপের সময় ওই নির্দিষ্ট এলাকায় আগে থেকে ঘোষণা দিতে হয় যেনো মালিক তার জমির বিষয়ে সচেতন হতে পারেন। এখন মালিক যদি না জানেন তাহলে তিনি তো যাবে না, ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। এখানে যদি স্কুলের শিক্ষার্থীরা এই বিষয়টা জানেন তাহলে কমপক্ষে বিষয়টা নিয়ে তার বাবার সঙ্গে আলোচনা করতে, এটার গুরুত্ব বুঝতে পারবেন৷ এজন্য আমাদের বেজ থেকেই তথ্যগুলো দেয়া দরকার। এতে সমস্যা পুরোপুরি সমাধান না হলেও ধীরে ধীরে কমে আসবে। 

শাকিল আহমেদ বলেন, জমির বিষয়ে অনেক মামলায় কোর্টেই আসা লাগে না, এসি ল্যান্ড অফিসেই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্ত আমরা জানিনা বলে কোর্টে চলে আসি। আর একবার কোর্টে চলে এলে বছর লেগে যায়৷ 

তিনি আরো বলেন, আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থীরা বাবা-মায়ের সবচেয়ে কাছে থাকেন। তাদের সঙ্গে তাদের বাবা-মায়ের ইন্টার‍্যাক্টটা অনেক বেশি হয়। অনেক সময় দেখা যায়, ছেলেমেয়ের বই বাবা-মায়েরাও পড়েন। ইউনিভার্সিটি লেভেলে আমরা হয়তো ডিটেইলস পড়ি। কিন্ত আমাদের বাবা-মায়ের সাথে সরাসরি ওই ইন্টার‍্যাক্টটা কম। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা নিজেরা বিষয়টাকে পরিবারের বড়দের জানাতে পারেন, আবার অভিভাবকরা বইটি পড়েও বিষয়টা জানতে পারেন। সবাই জানার ফলে দেখা যাবে মিসম্যানেজমেন্ট বা করাপশন কমে যাবে।  এর ফলে আগে দশটা সমস্যা হলে এখন সেটা কমে যদি ছয়টাতেও আসে সেটাই এই কারিকুলামের ক্রেডিট।

প্রসঙ্গত, দেশের চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূমি আইন সংশ্লিষ্ট বিভাগ চালু আছে। এগুলো হলো- ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।  

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
তাপপ্রবাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার বিষয়ে নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha তাপপ্রবাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার বিষয়ে নতুন নির্দেশনা জাল সনদেই সরকারকে হাইকোর্ট, নয় শিক্ষক অবশেষে ধরা - dainik shiksha জাল সনদেই সরকারকে হাইকোর্ট, নয় শিক্ষক অবশেষে ধরা মা*রা গেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি - dainik shiksha মা*রা গেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ইরানের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন মোখবার - dainik shiksha ইরানের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন মোখবার এমপিওভুক্ত হচ্ছেন ৩ হাজার শিক্ষক - dainik shiksha এমপিওভুক্ত হচ্ছেন ৩ হাজার শিক্ষক কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039761066436768