মঞ্জুরি কমিশনের করণীয় কি কিছুই নেই

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ভিসি অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৫ জুন। সংবাদপত্রে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে, শেষ সময়ে এসে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ উৎসবে মেতে উঠেছেন তিনি। ঘনিষ্ঠ শিক্ষকদের স্বজন ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের নিয়োগ দেয়ার অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া ভিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ, বছর খানেক ধরে পর্যায়ক্রমে ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরী হত্যার আসামিদের আত্মীয়স্বজনকে চাকরি দিয়ে ‘পুরস্কৃত’ করেছেন তিনি। সোমবার (১৩ মে) দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

জানা গেছে, সবক’টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী (অ্যাডহক) ও দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিয়োগ বন্ধ রাখতে গত বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি নির্দেশনা জারি করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। কিন্তু সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গত মার্চ ও এপ্রিলে ২৩ জনকে নিয়োগ করেছে। এছাড়া গত বছরের ডিসেম্বরে ৫১৯তম সিন্ডিকেট সভায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পদে স্থায়ী ও অস্থায়ী ভিত্তিতে ১৩৪ জনকে নিয়োগের অনুমোদন নেয়া হয়। কিন্তু কর্মীদের পদ ও বিভাগ সম্পর্কে সিন্ডিকেটকে জানানো হয়নি। বিষয়টিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন শিক্ষকরা। চলতি মাসে আরও কর্মী নিয়োগ দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। এসব নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়মের তথ্যও পাওয়া গেছে। নানা অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত, অস্ত্রধারীও নিয়োগ পেয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

চবি ভিসির স্বেচ্ছাচারিতার খবরটি নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। আমরা বিস্মিত হলাম জেনে যে, ভিসির সম্মতিতে বিতর্কিত ব্যক্তিদের পর্যায়ক্রমে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক অনিয়ম হচ্ছে অথচ কেউ কিছু বলছে না, এ ব্যাপারে কারও কোন মাথাব্যথা নেই।

প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নিজস্ব বিধি রয়েছে। সেই বিধি মোতাবেক সিন্ডিকেটের অনুমোদনসাপেক্ষে নিয়োগ প্রক্রিয়াসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এ বিধির বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা নেই কারও। অথচ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসিই যেন সবকিছুর হর্তাকর্তাবিধাতা। তিনিই নিয়ম, তিনিই প্রশাসন; কোন জবাবদিহিতা তাকে স্পর্শ করতে পারে না। প্রশ্ন হচ্ছে, এ প্রথা চালু হলো কিভাবে? খুনের মামলার অভিযুক্তদের আত্মীয়স্বজনদের পুরস্কৃত করার চিন্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির মাথায় এলো কী করে? একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কোন জাদু শক্তিবলে ‘রোমান সম্রাট’ হয়ে উঠলেন?

চবি ভিসির এ স্বেচ্ছাচারিতার অবসান আমরা দেখতে চাই। ভিসির স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেটকে দৃঢ় অবস্থানে যেতে হবে। ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে কঠোর হতে হবে। রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, আইনের শাসন ও সুশাসন নিশ্চিত করা বাঞ্ছনীয়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032289028167725