মধ্যপ্রদেশের ইঞ্জিনিয়ারিং পাঠক্রমে মহাভারত-রামায়ণ

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

ভারতের মধ্যপ্রদেশে বিজেপি-শাসিত সরকার সে রাজ্যের ইঞ্জিনিয়ারিং পাঠক্রমে হিন্দু মহাকাব্য রামায়ণ ও মহাভারতের অংশবিশেষ যোগ করে বিরাট বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

ওই রাজ্যের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে, রামায়ণে বর্ণিত রামসেতু - পাথর ফেলে যে পৌরাণিক সেতু তৈরি করে শ্রীরামচন্দ্র ভারত থেকে শ্রীলঙ্কায় গিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয় - তার প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান ছাত্রদের পড়ানো হবে।

মধ্যপ্রদেশের উচ্চশিক্ষামন্ত্রী ড. মোহন যাদব মন্তব্য করেছেন, "এগুলো পড়ানোতে অন্যায় কিছুই নেই। শ্রীরামচন্দ্রের চরিত্র ও সেই যুগে তাঁর অবদান নিয়ে সকলেই শিখতে পারেন।" সরকার আরও দাবি করছে, ভারতের 'অতীত গরিমা'কে সামনে নিয়ে আসার জন্যই এই পদক্ষেপ।

উচ্চশিক্ষামন্ত্রী আরও দাবি করেছেন, মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র এক গবেষণাতেও নাকি প্রমাণিত হয়েছে লক্ষ লক্ষ বছর আগে 'রামসেতু' মানুষের হাতেই তৈরি হয়েছিল। 

ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীরা যেমন এই রামসেতু নিয়ে পড়বেন, তেমনি আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে বিএ (স্নাতক) স্তরের ছাত্রছাত্রীদের তুলসীদাস রচিত রামচরিত মানসের 'ব্যবহারিক দর্শন' নিয়েও পড়তে হবে।

'ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতা কীভাবে ভারতীয় সংস্কৃতির গভীরে প্রোথিত' অথবা 'বেদ-উপনিষদ-পুরানের চার যুগ' - এই সব বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের একটি ১০০ নম্বরের প্রশ্নপত্রেরও উত্তর দিতে হবে।

এর আগে মধ্যপ্রদেশ সরকার মেডিক্যাল ছাত্রছাত্রীদের ফাউন্ডেশন কোর্সেও বিজেপি-আরএসএস নেতাদের জীবনী পড়ানোরও প্রস্তাব রেখেছে - তা নিয়েও বিতর্ক কম হয়নি।

আরএসএসের প্রতিষ্ঠাতা কেশব হেডগেওয়ার, বিজেপির পূর্বসূরী জনসঙ্ঘের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা দীনদয়াল উপাধ্যায়-সহ আরও অনেকের জীবনীই মেডিক্যাল ছাত্রদের শিক্ষাক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

ডাক্তারির ছাত্রদের মধ্যে যাতে 'সামাজিক ও মেডিক্যাল এথিকস' (নীতিবোধ) জাগরূক হয়, সে জন্যই ওই পদক্ষেপ বলে তখন সরকারের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়েছিল।

রাজ্যের বিরোধী দল কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, প্রযুক্তি ও উচ্চশিক্ষার সঙ্গে জোর করে ধর্মকে মিশিয়ে বিজেপি সরকার আসলে মধ্যপ্রদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে।

রাজধানী ভোপালের কংগ্রেস বিধায়ক আরিফ মাসুদ এমনও দাবি করেছেন, "কলেজগুলোতে যদি রামচরিত মানস বা মহাভারত পড়ানো হয়, তাহলে কোরান-বাইবেল বা গুরু গ্রন্থসাহিবের শিক্ষাও ছাত্রদের পড়াতে হবে।"

সূত্র : বিবিসি বাংলা


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে - dainik shiksha কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা - dainik shiksha ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন - dainik shiksha সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল - dainik shiksha ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে - dainik shiksha নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0049870014190674