মধ্যবিত্ত পরিবারে বাল্যবিয়ের হার উদ্বেগজনক

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতেও বাল্যবিবাহের হার অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এ হার মোট বাল্যবিবাহের প্রায় এক-চতুর্থাংশ। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনে এক অনুষ্ঠানে ‘বাল্যবিয়ের কারণ ও সামাজিক অভিঘাত’ শীর্ষক সমীক্ষাটির তথ্য নীতিনির্ধারক ও অন্যান্য অংশীজনদের সামনে তুলে ধরা হয়।

২০২১ থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত আটটি বিভাগের সিটি করপোরেশন থেকে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ২ হাজার ৬০ জনের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই সমীক্ষা করে মহিলা পরিষদ।

সমীক্ষার তথ্য উপস্থাপনে বলা হয়, বাল্যবিবাহ দেওয়া অভিভাবকদের মধ্যে প্রায় ৩১ শতাংশ (২৬০ জন) নিরক্ষর, ৪১ শতাংশ (৩৪৭ জন) অক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন, ২৬ শতাংশ (২১৭ জন) স্বল্পশিক্ষিত এবং শিক্ষিত ৪ শতাংশ (৩৩ জন)।

এই জরিপে অভিভাবকদের দেওয়া তথ্যে দেখা গেছে, ১৩-১৫ বছর বয়সী কন্যাশিশুরাই বেশি বাল্যবিবাহের শিকার হয়, যা মোট বাল্যবিবাহের ৭২ শতাংশ। অন্যদিকে বাল্যবিবাহের শিকার ৫৭ শতাংশ কন্যাশিশুর বিয়ে ১২-১৫ বছরের মধ্যে হয়েছে। ৫৬ শতাংশ অভিভাবক বাল্যবিবাহের আইন সম্পর্কে অবগত হয়েও আইন অমান্য করে নানাভাবে তাঁদের কন্যাশিশুর বিয়ে দিয়েছেন। এ বিয়েগুলোর মধ্যে ৫৮ শতাংশই রেজিস্ট্রি ছাড়া সম্পন্ন হয়েছে ।

অনুষ্ঠানে গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, পালিয়ে বিয়ে করায় বাল্যবিবাহ বাড়ছে—এই অজুহাত দেখানো বন্ধ করতে হবে। বাল্যবিবাহ দিলে কন্যা উপবৃত্তি পাবে না—এমন শর্ত আরোপ করা যেতে পারে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে সমন্বয় করে কিশোরী ক্লাব মনিটরিং করতে হবে। বাল্যবিবাহ বন্ধে তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি দূর করতে সরকারি সংস্থাকে উদ্যোগ নিতে হবে।

মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল আজিজ বলেন, অনেক আইন থাকলেও বাস্তব অবস্থার কারণে তা প্রয়োগ করা যায় না। গ্রামে অত্যন্ত দরিদ্রদের মধ্যে বাল্যবিবাহের প্রবণতা বেশি। বংশানুক্রমে কাজির ছেলে কাজি হয়, এটা বন্ধ করা গেলে বাল্যবিবাহ

বন্ধে সুফল আসত। কাজিরা তাঁদের সুযোগ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। এ জন্য প্রশাসনকে জোরালো ভূমিকা পালনে জনপ্রতিনিধিদের তৎপর হতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় বড় বাধা। শিক্ষার মান উন্নত করার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষাকে পণ্য হওয়া থেকে মুক্ত করে কিশোর-কিশোরীদের মানবিক শিক্ষা দিতে হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কমপ্লেইন বক্স বন্ধ - dainik shiksha গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কমপ্লেইন বক্স বন্ধ পদত্যাগে বাধ্য করা অধ্যক্ষকে ফুলেল শুভেচ্ছায় ফেরালেন শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha পদত্যাগে বাধ্য করা অধ্যক্ষকে ফুলেল শুভেচ্ছায় ফেরালেন শিক্ষার্থীরা শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম দামে বিটিসিএলের ইন্টারনেট দেয়া হবে: তথ্য উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম দামে বিটিসিএলের ইন্টারনেট দেয়া হবে: তথ্য উপদেষ্টা শিক্ষকের ছোড়া স্কেলের আঘাতে শিক্ষার্থীর চোখ হারানোর অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষকের ছোড়া স্কেলের আঘাতে শিক্ষার্থীর চোখ হারানোর অভিযোগ দুই শিক্ষকের বহিষ্কারের দাবিতে বাউবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ - dainik shiksha দুই শিক্ষকের বহিষ্কারের দাবিতে বাউবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ হলগুলোকে সন্ত্রাসমুক্ত করে ছাড়বো : রাবি উপাচার্য - dainik shiksha হলগুলোকে সন্ত্রাসমুক্ত করে ছাড়বো : রাবি উপাচার্য কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0053739547729492