মধ্যরাতে পুলিশ পরিচয়ে জবি শিক্ষার্থীদের মেস ছাড়ার নির্দেশ

দৈনিক শিক্ষাডটকম, ঢাবি |

মধ্যরাতে পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বসবাসরত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সাধারণ শিক্ষার্থীদের পুলিশ পরিচয়ে মেস ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে ছাত্রীরা আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছেন। 

বৃধবার দিবাগত রাত বারোটার পর পুরান ঢাকার শিংটোলা, ধোলাইখাল,রুকনপুর, গেন্ডারিয়া, সুত্রাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় বসবাসরত শিক্ষার্থীদের মেসে এসব ঘটনা ঘটে।

সুত্রাপুরের শিংটোলা বসবাসরত শিক্ষার্থী নাগিব বলেন, আমরা বাসায় নয়জন থাকি। পুলিশের পোশাকসহ সিভিলে প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন লোকের একটা টিম আসে। তারা বলেন, কালকে সকাল ৮টার মধ্যে বাসা ছেড়ে দিয়ে চলে যাবেন। আমাদের আরেকটি টিম সকাল ১০টায় এসে খোঁজ নিয়ে যাবো। 

পুরান ঢাকার কলতাবাজারে মেসে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্নাতকোত্তরের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের বাসায় রাত সাড়ে বারোটার দিকে বাসার গার্ডসহ কিছু মানুষ আমাদের বলেন, আগামীকালের মধ্যে মেস ছেড়ে বাড়ি চলে যেতে। আমরা বলছি, আমাদের অনেকেই টিউশন করাই, স্টুডেন্টের পরিক্ষা আছে, আমরা চাইলেও স্টুডেন্টের পরিবার যেতে দেবে না।  আর এখন বাস, ট্রেন সব বন্ধ, রাস্তায় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে এ দায় কে নেবে? 

তখন তারা বলেন, ঠিক আছে আপনারা বাসায় থাকেন কিন্তু আন্দোলনে যাবেন না। আর পরিবেশ শান্ত না হলে আস্তে আস্তে বাসায় চলে যাবেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক নারী শিক্ষার্থী জানান, বাড়িওয়ালা আমাদেরকে ফোন করে বলেন, কাল সকাল আটটার মধ্যে বাসা খালি করে দেবে। তোমাদের কোনোকিছু হলে তার দায় আমি নেবো না। পুলিশ আমাকে কল করে বলেছে। পুলিশ ধরেও নিয়ে যেতে পারে।

জোবায়দা খানম নামে আরেক নারী শিক্ষার্থী বলেন, রাত সাড়ে ১১টার সময় পুলিশ পরিচয়ে ছয়জন আমাদের বাসায় আসেন। তারা সবাই ছিলেন সিভিলে। তাদের হাতে ছিলো না কোনো ওয়ারলেস। আমাদের বাসায় এসেই তারা বলেন, সকালে যেনো আমরা মেস ছেড়ে চলে যাই। পরে আমরা বলেছি এই মুহূর্তে আমাদের পক্ষে চলে যাওয়া সম্ভব না। আমাদের টিউশন আছে। এ কথা বলার পরে তারা বলে, আমরা যেনো কোনো ধরনের আন্দোলনে না যাই।  

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সবকিছু তো আমার নিয়ন্ত্রণে না। আমাদের যতোটুকু নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে ততোটুকুতে এখনো কেউ আঘাত হানতে পারিনি। আমাদের শিক্ষার্থীরা অনেকগুলো মেসে অবস্থান করেন। এতোগুলো মেসের সন্ধান তো আমার কাছে নেই। তারপরও বিষয়গুলো আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। 

তবে মেসে মেসে হানা দেয়া এবং মেস ছাড়ার নির্দেশ দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে স্থানীয় থানা পুলিশ। এ বিষয়ে সুত্রাপুর থানার ডিউটি অফিসার মামুন মাহমুদ বলেন, আমাদের পুলিশ গেলে আমরা জানতাম। এ ধরনের কিছু জানা নেই। আর পুলিশ গেলে ইউনিফর্মে যাবে। পুনরায় গেলে থানায় খবর দেয়ার পরামর্শও দেন তিনি।

কোতোয়ালি থানার ডিউটি অফিসার রুহুল আমিন বলেন, কোতোয়ালি থানা এলাকায় শিক্ষার্থীদের তেমন কোনো মেস নেই। আর এই ধরনের কোন খবর আমরা জানি না।

জানতে চাইলে লালবাগ জোনের ডিসি মো. মাহবুব-উজ-জামান বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। বিষয়টি দেখতে হবে। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে - dainik shiksha অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে দুই শব্দে অধ্যক্ষের পদত্যাগ! - dainik shiksha দুই শব্দে অধ্যক্ষের পদত্যাগ! বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে পাকিস্তান - dainik shiksha বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে পাকিস্তান বিএনপি নির্বাচিত হলে গুম প্রতিরোধে আইন করব: তারেক - dainik shiksha বিএনপি নির্বাচিত হলে গুম প্রতিরোধে আইন করব: তারেক ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইসহাক আলীর মৃত্যু শ্বাসরোধে: মেঘালয় পুলিশ - dainik shiksha ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইসহাক আলীর মৃত্যু শ্বাসরোধে: মেঘালয় পুলিশ ঢাবিতে যোগ দিলেন চাকরিচ্যুত অধ্যাপক ড. সাইফুল - dainik shiksha ঢাবিতে যোগ দিলেন চাকরিচ্যুত অধ্যাপক ড. সাইফুল কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002640962600708