মনিপুর কলেজে অধ্যক্ষ পদে থাকার সুযোগ নেই ফরহাদ হোসেনের

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

নিয়ম অনুযায়ী বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের বয়স ৬০ বছর পূর্ণ হওয়ার পর তাকে কোনো অবস্থাতেই ওই পদে পুনর্নিয়োগের সুযোগ নেই। যদিও রাজধানীর মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ফরহাদ হোসেনের চাকরির বয়সসীমা পূর্ণ হওয়ার পরও বিধিবহির্ভূতভাবে তাকে অধ্যক্ষ পদে পুনরায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রধান শিক্ষক পদে থাকাকালীনও অবৈধভাবে বছরের পর বছর অধ্যক্ষ হিসেবে সিল ব্যবহার করতেন তিনি। সোমবার (৪ জানুয়ারি) বণিক বার্তা পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন সাইফ সুজন।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, মো. ফরহাদ হোসেনের অনিয়ম তদন্তে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) গঠিত কমিটির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সরেজমিন পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্টদের সাক্ষাত্কার গ্রহণ করে সম্প্রতি প্রতিবেদনটি জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি। 

ফরহাদ হোসেনের অধ্যক্ষ পদে পুনরায় নিয়োগ বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ অনুযায়ী, ৬০ বছর পূর্ণ হওয়ার পর কোনো প্রতিষ্ঠানে প্রধান, সহকারী প্রধান কিংবা শিক্ষক-কর্মচারীকে কোনো অবস্থাতেই পুনরায় নিয়োগ কিংবা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া যাবে না। ফরহাদ হোসেনের জন্মতারিখ ১৯৬০ সালের ৩ জুলাই। সে হিসেবে ২০২০ সালে ২ জুলাই ৬০ পূর্তিতে তিনি অবসরে যান। যদিও গত বছরের ২০ মে ২০২৩ সাল পর্যন্ত তিন বছরের জন্য তার নিয়োগের মেয়াদ বাড়ায় গভর্নিং বডি, যা বিধিসম্মত হয়নি।

এ প্রসঙ্গে তদন্ত কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তদন্ত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি সরেজমিন পরিদর্শনে যাই। সেখানে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীর লিখিত ও মৌখিত বক্তব্য গ্রহণ করি। সবার বক্তব্য ও তথ্য-প্রমাণাদি বিশ্লেষণ করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। সম্প্রতি প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেয়া হয়েছে। পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ভালো বলতে পারবেন।

এছাড়া প্রধান শিক্ষক পদে থাকাকালীন বছরের পর বছর নিজেকে অধ্যক্ষ দাবি করে ওই পদের সিল ব্যবহার করতেন ফরহাদ হোসেন। এ বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১০ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও ফরহাদ হোসেন বিধিমোতাবেক অধ্যক্ষ পদটি ব্যবহার করতে পারেন না। যদিও ২০১০ সাল থেকেই তিনি অধ্যক্ষ সিল ব্যবহার করে আসছেন, যা গুরুতর অনিয়ম বলেই মনে হয়েছে। কেননা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো অনুযায়ী স্ববেতনে প্রধান শিক্ষক হিসেবেই নিয়োজিত থাকার কথা। এক্ষেত্রেও নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে বলে তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে প্রতীয়মান হয়।


এদিকে প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে অবৈধভাবে অর্থ উত্তোলনের অভিযোগও রয়েছে ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমপিও শিটে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ না করে ফরহাদ হোসেনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা বিধিসম্মত নয়। তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্তি পর্যন্ত ২০ লাখ টাকার বেশি অর্থ উত্তোলন করেছেন। এ বিষয়টি পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে যাচাই করা যেতে পারে।

ফরহাদ হোসেনকে বাদ দিয়ে নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগের সুপারিশও করা হয়েছে মাউশির তদন্ত প্রতিবেদনে। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে সরকারি নীতিমালা মেনে একজন নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন।

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? - dainik shiksha শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ - dainik shiksha অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে - dainik shiksha সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028750896453857