ফরহাদ বলেন ভিন্ন কথামনিপুর স্কুলের ৮৪ শিক্ষক নিয়মিত এমপিও পান

নিজস্ব প্রতিবেদক |

রাজধানীর মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের ৮৪ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে নিয়মিত এমপিও (বেতন-ভাতার সরকারি অংশ) দেয় সরকার।  এদের মধ্যে ৭০ জন শিক্ষক ও ১৪ জন কর্মচারী। তবে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ‘অধ্যক্ষ’ ফরহাদ হোসেন বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করে আসছেন ‘প্রতিষ্ঠানটির কোনো শিক্ষক কর্মচারী এমপিও নেন না’। কিন্তু বাস্তবে প্রতিষ্ঠানটির  ৮৪ জন শিক্ষক কর্মচারীর এমপিও বাবদ বিপুল পরিমাণে টাকা প্রতিমাসে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে দেয়া হয়। দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য। মনিপুর স্কুলের এমপিও শিটের কপি দৈনিক শিক্ষার হাতে রয়েছে। 

জানা গেছে, মনিপুর স্কুলের ৭০ জন এমপিওভুক্ত শিক্ষকের মধ্যে ৩৯ জন প্রভাষককে ৯ম গ্রেডে বেতন ভাতা দেয় সরকার। অপরদিকে ২৬ জন সহকারী শিক্ষককে ১০ম গ্রেডে এবং ৪ জন সহকারী শিক্ষককে ১১তম গ্রেডে বেতন দেয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক আহাদ আলীকে বেতন দেয়া হয় ৭ম গ্রেডে। 

এছাড়া প্রতিষ্ঠানটিতে ১৪ জন কর্মচারী এমপিওভুক্ত রয়েছেন। এদের মধ্যে ৬ জন ১৫তম গ্রেডে, ৭ জন ১৯তম গ্রেডে এবং একজন কর্মচারী ২০ তম গ্রেডে বেতন ভাতা দেয়া হয় বলে শিক্ষা অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে। যদিও মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের স্বঘোষিত অধ্যক্ষ ফরহাদ হোসেন টক শো সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করে আসছেন, প্রতিষ্ঠানটির কোনো শিক্ষক কর্মচারী এমপিও নেন না। তবে, অবৈধভাবে নিয়োগ লাভের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির স্বঘোষিত অধ্যক্ষের এমপিও স্থগিত আছে। 

এদিকে নানা অনিয়মের অভিযুক্ত স্বঘোষিত অধ্যক্ষ ফরহাদ হোসেনের অনিয়ম তদন্তে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। এই কমিটি অধ্যক্ষের নানা অনিয়মসহ প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক অনিয়মও তদন্ত করবে। কমিটির প্রধান শিক্ষা অধিদপ্তরের বিশেষ শিক্ষা শাখার উপ-পরিচালক সৈয়দ মইনুল হোসেন। অন্য সদস্যরা হলেন সহকারি পরিচালক মো. সবুজ আলম, খালিদ সাইফুল্লাহ ও তানভীর মশাররফ খান। 

ফরহাদ হোসেন নিজেকে অধ্যক্ষ দাবি করে ইতোমধ্যে ২০ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন বলে প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক বলছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে মনিপুর হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ছাত্র ভর্তির অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু উক্ত অনুমোদন পত্রে কিংবা পরবর্তীতে মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ফরহাদ হোসেনকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়নি। তথাপিও ফরহাদ হোসেন অধ্যক্ষ ক্ষমতার অপব্যবহার করে অধ্যক্ষ পদ ব্যবহার করে বেতন ভাতা গ্রহণ করে আসছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা অনুযায়ী ফরহাদ হোসেন অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ লাভের যোগ্য ছিলেন না। অথচ তিনি অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ম্যানেজিং কমিটি বরাবরে নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্যাটি উত্থাপন না করে স্বঘোষিতভাবে অধ্যক্ষ পদ ব্যবহারের মাধ্যমে স্কুল ও কলেজটির তহবিল থেকে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল পর্যন্ত ২০ লাখের বেশি  টাকা উত্তোলন করেন।  দুদক ফরহাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করে। এই সুপারিশের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়। এরই অংশ হিসাবে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির উদ্যোগ স্থগিতের নেপথ্যে - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির উদ্যোগ স্থগিতের নেপথ্যে শিক্ষাখাতে অপপ্রচারে ভূয়া অভিভাবক ফোরাম, জাল সনদের অধ্যক্ষ - dainik shiksha শিক্ষাখাতে অপপ্রচারে ভূয়া অভিভাবক ফোরাম, জাল সনদের অধ্যক্ষ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030879974365234