জলঢাকায় করোনাকালীন সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় স্কুল-কলেজগুলোর বারান্দা, শ্রেণিকক্ষ এবং মাঠ দখলে নিয়ে বালু, সিমেন্ট, রড, ধান, ভুট্টা ও পাট মজুত করেছে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী ও ঠিকাদারের লোকজন। উপজেলার স্কুল-কলেজগুলো দেখে মনে হয় যেন গোডাউন। এছাড়া ময়লা-আবর্জনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এদিকে অনেক ব্যবসায়ী ধান ও ভুট্টা শুকানোর কাজে ব্যবহার করছেন বিদ্যালয়ের বারান্দাগুলো।
আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’
জলঢাকা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ২৪৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫১টি এবং মাদ্রাসা রয়েছে ২৯টি।
সম্প্রতি সরকার ঘোষিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা করার ঘোষণা থাকলেও অনেক প্রতিষ্ঠানেই তা মানা হচ্ছে না। সরেজমিনে অনেক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ও মাঠে দেখা গেছে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালামাল। বালু, সিমেন্ট, রডসহ ঠিকাদারী কাজের ব্যবহূত জিনিসপত্র আবার অনেকে রেখেছেন ধান, ভুট্টাসহ বিভিন্ন জিনিস। বিদ্যালয়গুলোর মাঠ দখল হয়ে যাওয়ায় কোমলমতি শিশুদের খেলাধুলায় বিঘ্ন ঘটছে। করোনাকালীন সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজগুলো ব্যবহার হচ্ছে কোনো না কোনো ব্যক্তিগত কাজে। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বারান্দায় ভুট্টা শুকাতে দেখা গেছে। গড়ধর্মপাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও একই চিত্র দেখা গেছে। ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন জানান, দীর্ঘদিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় স্থানীয় লোকজন এই সুযোগটা নিয়েছে। বার বার নিষেধ করলেও তারা মানছেন না। এছাড়াও খচিমাদা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দেখা গেছে, ঠিকাদারী কাজে ব্যবহূত বালু ও পাথর দিয়ে মাঠ বোঝাই করা হয়েছে।
এ সময় স্থানীয় কৃষকরা জানান, বিদ্যালয়টি দেখভাল করার কেউ নেই। প্রধান শিক্ষক আসেন না নিয়মিত। তাইতো বিদ্যালয়ের মাঠ দখলে নিয়েছে ঠিকাদারের লোকজন।
তবে এ ব্যাপারে খচিমাদা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বলেন, সব শিক্ষককে তাদের স্ব স্ব বিদ্যালয়গুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে বলেছি। যদি কেউ এ নির্দেশনা অমান্য করে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন
অন্যদিকে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা চঞ্চল কুমার ভৌমিক বলেন, পুনরায় অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম বিদ্যালয়গুলোতে শুরু হয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিদ্যালয়ে আসতে এবং প্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুব হাসান বলেন, বিষয়টি আমি বিভিন্ন মাধ্যমে অবগত হয়েছি। এরই মধ্যে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।