রাজশাহীর মসজিদ মিশন একাডেমি থেকে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র জামায়াত-শিবিরের নিয়ন্ত্রণ এবং সেখান থেকে রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। একই সাথে প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকদের প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্ব দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। একই সাথে রাষ্ট্রবিরোধিতায় অভিযুক্ত শিক্ষকদের অব্যহতি দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে। শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির রাজশাহী জেলা ও মহানগর শাখা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার এত বছর পরও মসজিদ মিশন একাডেমিতে জঙ্গিবাদের চর্চা চলে। এটা আর হতে দেয়া হবে না। আমরা স্কুল বন্ধের পক্ষে নই। আমরা এই প্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠন চাই। বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে সেখানে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষদের দায়িত্ব দিতে হবে। আর যেসব শিক্ষকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের মামলা রয়েছে তাদের সরাসরি অব্যহতি দিতে হবে। তা না হলে রাজশাহীতে আন্দোলন চলবেই।
বক্তারা আরও বলেন, মসজিদ মিশনের ১১ কোটি টাকা জঙ্গিবাদে ব্যয় করা হয়েছে। এখানকার শিক্ষকদের আমাদের পয়সায় বেতন হয়। কিন্তু তারা আমাদের রক্ত নিয়ে ‘হলি’ খেলে। তারা আমাদেরই বুকের ওপর উঠে আমাদের সন্তানদের জঙ্গিবাদ শিক্ষা দেয়। এর শেষ রাজশাহীবাসীকেই করতে হবে। অবিলম্বে প্রতিষ্ঠানটির অভিযুক্ত শিক্ষকদের অব্যহতি দিতে হবে। তা না হলে আমরাই গিয়ে তাদের ঘাড় ধরে বের করে দেব। পরিচালনা পর্ষদও পুনর্গঠন করা হবে।
তারা আরও বলেন, ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠানের মহিলা শাখায় শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেছিলেন। এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কাছে মেয়েরাও নিরাপদ নয়। আমরা রাস্তায় নেমেছি সরকারের দুটি মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে। সুতরাং সরকারকেই এখন যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা আমাদের দাবি থেকে এক বিন্দুও পেছনে সরে আসব না।
প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে অংশ নেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির রাজশাহী মহানগরের নির্বাহী সভাপতি ড. সুজিত সরকার, সদস্যসচিব শাহ আলম বাদশা, কবিকুঞ্জের সাধারণ সম্পাদক কবি আরিফুল হক কুমার, কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক উপাধ্যক্ষ মো. কামরুজ্জামান, মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন আলী মোল্লা, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের জেলার সাধারণ সম্পাদক অঞ্জনা সরকার, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের জেলার সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার ঘোষ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামার উল্লাহ সরকার কামাল, আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরামের জেলার সভাপতি নিতাই কুমার সরকারসহ অনেকে।