মহাকবি কায়কোবাদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

দৈনিকশিক্ষা প্রতিনিধি |

‘কে ওই শুনাল মোরে/ আযানের ধ্বনি/ মর্মে মর্মে সেই সুর/ বাজিল কি সুমধুর/ আকুল হইল প্রাণ/ নাচিল ধমনী/কি মধুর আযানের ধ্বনি!- বিখ্যাত সেই ‘আযান’ কবিতার লেখক মহাকবি কায়কোবাদের আজ ৭২তম মৃত্যুবাষির্কী।

ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার আগলা পূর্বপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কবি কায়কোবাদ। কায়কোবাদ কবির সাহিত্যিক নাম হলেও তার প্রকৃত নাম মোহাম্মদ কাযেম আল কোরেশী। ১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দের ২১জুলাই কবি মৃত্যুবরণ করেন।

মাত্র ১৩ বছর বয়সে ১৮৭০ খ্রিষ্টাব্দ কায়কোবাদের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘বিরহ বিলাপ’ প্রকাশ হলে বাংলা সাহিত্যঙ্গণে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। কায়কোবাদ মুলত একজন ‘গীতিকবি’। এছাড়া সনেট, মহাকাব্য, কাহিনীকাব্য ও গানেও ছিলেন সমানভাবে পারদর্শী। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হলো বিরহ বিলাপ, কুসুম কানন, অশ্রুমালা, মহাশ্মশান, শিব মন্দির, অমিয় ধারা, শ্মশান ভস্ম ও প্রেমের ফুল। মুসলমান কবিদের মধ্যে তিনিই প্রথম মহাকবি উপাধি লাভ করেন। ১৯০৪ সালে তার মহাকাব্য মহাশ্মশান প্রকাশ হলে এই উপাধি লাভ করেন তিনি।

 বাংলা সাহিত্যে কায়কোবাদের অসাধারণ অবদানের জন্য সারাদেশের মানুষের কাছে কবি সমাদৃত হলেও নিজ জন্মস্থানে তিনি অবহেলিত। আগলা গ্রামে কবির তেমন কোন স্মৃতিচিহ্ন আর অবশিষ্ট নেই। যে স্মৃতিগুলো আছে সেগুলোও নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে। কায়কোবাদের ভক্ত অনুরাগীরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগলা গ্রামে এসে কোন স্মৃতিচিহ্ন না দেখে হতাশ হন। বাড়িতে কবির বংশধরেরা না থাকলেও রয়েছে কবির আমলের একটি মসজিদ।

১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে সুবিদ আলী নামে এক ব্যক্তি কবির সম্মনার্থে আগলা গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন কায়কোবাদ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। কিন্তু বিদ্যালয়ের পাঠাগারে কায়কোবাদের কোন বই নেই। যার জন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কবি সম্পর্কে তেমন কিছু জানতে পারছে না। কায়কোবাদের নাতি টুটুল আলম কোরেশী কবির বাড়িটি দখলমুক্ত করে কবির নামে একটি পাঠাগার ও গবেষণাগার নির্মাণের দাবি জানান।

কবির বাড়ির পশ্চিমে ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে আগলা মাছপাড়ায় প্রতিষ্ঠিত করা হয় কায়কোবাদ যুব ক্লাব ও গণপাঠাগার। জায়গাটি বরাদ্দ দেন স্থানীয় হরিষচন্দ্র পোদ্দার। গত ১০বছর ধরে পাঠাগারটির সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এছাড়া নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলার চৌরাস্তায় কায়কোবাদের নামে গোল চত্বর নির্মাণ করা হলেও সেটি ভেঙে নির্মাণ করা হয়েছে স্বাধীনতা চত্বর। স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠন কবি কায়কোবাদের নামে চত্বরটি পুনস্থাপনের দাবি জানিয়েছে।

কায়কোবাদ স্মৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরশাদ আলী বলেন, কায়কোবাদ নবাবগঞ্জ উপজেলার আগলা গ্রামের জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলেই ধন্য এই গ্রাম। বাংলা সাহিত্যের রত্নভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করে রেখে যাওয়ায় অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবেন মহাকালের মহাকবি কায়কোবাদ। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কমপ্লেইন বক্স বন্ধ - dainik shiksha গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কমপ্লেইন বক্স বন্ধ পদত্যাগে বাধ্য করা অধ্যক্ষকে ফুলেল শুভেচ্ছায় ফেরালেন শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha পদত্যাগে বাধ্য করা অধ্যক্ষকে ফুলেল শুভেচ্ছায় ফেরালেন শিক্ষার্থীরা শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম দামে বিটিসিএলের ইন্টারনেট দেয়া হবে: তথ্য উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম দামে বিটিসিএলের ইন্টারনেট দেয়া হবে: তথ্য উপদেষ্টা শিক্ষকের ছোড়া স্কেলের আঘাতে শিক্ষার্থীর চোখ হারানোর অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষকের ছোড়া স্কেলের আঘাতে শিক্ষার্থীর চোখ হারানোর অভিযোগ দুই শিক্ষকের বহিষ্কারের দাবিতে বাউবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ - dainik shiksha দুই শিক্ষকের বহিষ্কারের দাবিতে বাউবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ হলগুলোকে সন্ত্রাসমুক্ত করে ছাড়বো : রাবি উপাচার্য - dainik shiksha হলগুলোকে সন্ত্রাসমুক্ত করে ছাড়বো : রাবি উপাচার্য কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030050277709961