মহাকাশচারীদের প্রস্রাব ও ঘামকে পরিশোধন করে সুপেয় পানি হিসেবে পুনর্ব্যবহার সম্ভব বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রসাব ও ঘামের ৯৮ শতাংশ পানি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
এটি আগামীতে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে দীর্ঘ অভিযান পরিচালনা করতে মহাকাশচারীদের জন্য যুগান্তকারী অগ্রগতি বলে ধরা হচ্ছে। কারণ মহাকাশে আরও ব্যবহারের জন্য খাবার, বাতাস ও পানির মতো উপাদানগুলো পুনর্ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।
মহাকাশে প্রতিটি মহাকাশচারীর পানি, খাবার তৈরি ও স্বাস্থ্যবিধির জন্য দিনে প্রায় এক গ্যালন পানি দরকার হয়। ক্রু সদস্যদের দীর্ঘ যাত্রার শুরুতে এগুলো সঙ্গে রাখতে হয়।
মহাকাশ স্টেশনের এনভায়রনমেন্ট কন্ট্রোল অ্যান্ড লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম সম্প্রতি দেখিয়েছে যে, এটি সেই উল্লেখযোগ্য লক্ষ্য অর্জন করতে পারে। এনভায়রনমেন্ট কন্ট্রোল অ্যান্ড লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমের অংশ হিসেবে সাবসিস্টেমগুলো ব্যবহার করে এই অগ্রগতি সম্ভব হয়।
এ বিষয়ে মহাকাশে লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম পরিচালনার দায়িত্বে থাকা জনসন স্পেস সেন্টারের ক্রিস্টোফার ব্রাউন বলেন, ‘এটি লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমের বিবর্তনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ধরুন আপনি ১০০ পাউন্ড পানি নিয়ে শুরু করলেন। আপনি এটির দুই পাউন্ড হারান। বাকি ৯৮ ভাগ পানি শুধু এদিক-ওদিক চলতে থাকে। সেটা ধরে রাখাটা একটা দারুণ কৃতিত্ব।’
এনভায়রনমেন্ট কন্ট্রোল অ্যান্ড লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম হলো- একটি হার্ডওয়্যারের সংমিশ্রণ যাতে পানি পুনরুদ্ধারের একটি ব্যবস্থা থাকে। এই সিস্টেম বর্জ্য পানি সংগ্রহ করে এবং পানি প্রসেসর ফিল্টারে পাঠায়। এটি খাবার পানি উত্পাদন করে।
একটি বিশেষ উপাদানের মাধ্যমে মহাকাশচারীর শ্বাস ও ঘাম থেকে কেবিনের বাতাসে নির্গত আর্দ্রতা ধরে রাখতে উন্নত ডিহিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা হয়।
আরেকটি সাবসিস্টেমে ইউরিন প্রসেসর অ্যাসেম্বলি (ইউপিএ) ভ্যাকুয়াম পাতন ব্যবহার করে প্রস্রাব থেকে পানি পুনরুদ্ধার করা যায়।
উল্লেখযোগ্য এই অগ্রগতির কারণে মহাকাশচারীরা চন্দ্র পৃষ্ঠে দীর্ঘ অবস্থানের সময় এবং মঙ্গল গ্রহে অভিযানে আরও বেশি সময় অবস্থান করতে পারবেন।