কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের নিহত হওয়ার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারসহ ৯ দফা দাবিতে বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আবারও আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে একটি মিছিল নিয়ে নগরীর বিনোদপুর এলাকায় শেষ করেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সালেহ হাসান নকীব, আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতেখারুল আলম মাসউদ, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জামিরুল ইসলাম ও ড মো. সাইফুল ইসলাম একাত্মতা পোষণ করে শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে অংশ নেন।
এসময় শিক্ষার্থীদের বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর, আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই, বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই, জেগেছেরে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে, আবু সাঈদ মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই, লেগেছেরে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে, আমাদের হল বন্ধ কেন, প্রশাসন জবাব চাই এমন সব স্লোগান দিতে দেখা যায়।
জানতে চাইলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাবির সমন্বয়ক মেহেদী হাসান সজীব বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের তুলে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে জিম্মি করে অস্ত্রের মুখে স্ক্রিপ্টেড বিবৃতি দিয়ে ছাত্রসমাজের দাবিসমূহের প্রতি সরকার চরম ধৃষ্টতা প্রদর্শন করেছে। শুধু তাই নয়, সারাদেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত শহীদদের পরিবারকে হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে, আর্মড ফোর্সকে ব্যবহার করে ঢাকায় এনে সরকার তাদের থেকে মিথ্যা জবানবন্দি নেওয়া ও সমস্ত দায় আন্দোলনকারীদের ওপর চাপিয়ে শহীদের রক্তের সঙ্গে তামাশা করেছে। আমরা এতোদিন চুপ ছিলাম এখন আর নয়।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশ নিয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকিব বলেন, এই মুহূর্তে আমরা রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। ঠান্ডা মাথায় মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং রাষ্ট্র জুড়ে যে অরাজকতা তৈরি করা হয়েছে তা শুধু যে আমাদের ব্যথিত করেছে তা নয়। আমরা বিক্ষুব্ধ। আমি ছাত্র ছাত্রীদের বলতে চাই শুধু এখন নয়, সারা জীবন তোমরা ন্যায্যতার পথে থাকবে। তোমরা সুবিচারের পক্ষে আছো, ন্যায় বিচারের পক্ষে আছো, ন্যায়ের পক্ষে আছো। তোমাদের সাহস ও দৃঢ়তা দেখে শিক্ষক হিসেবে আমি গর্ববোধ করি।
তিনি আরও বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধে আর ফিরে যেতে পারব না। নতুন করে মুক্তিযুদ্ধা হওয়ার কোন সুযোগ নেই। তবে যারা ন্যায়, ন্যায্যতা ও অধিকারের পক্ষে আছেন তারা এই যুগের রাজাকার। যারা মানুষের অধিকার হরণ করে, যাদের কাছে মানুষের রক্তের দাম নেই, যারা ন্যায় বিচারের পক্ষে দাঁড়াতে পারে না, সাহস নেই, সত্যি কথা বলতে পারে না তাদের মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা জঘন্য শোনায়।