মাইগ্রেশন চান নাইটিংগেল মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে লাখ টাকা খরচ করে ৬১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিলেন বেসরকারি মেডিকেল কলেজে। কিন্তু তিন বছর পর সে স্বপ্ন ভেস্তে যেতে পরেছে। কখনো চিকিৎসক হতে পারবেন কি না তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন ঢাকার আশুলিয়ার নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। প্রতিষ্ঠান কর্তপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলে তারা মাইগ্রেশনের দাবি জানিয়েছেন। এ দাবিতে রোববার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালিতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে মানববন্ধন করেছেন তারা।

মানববন্ধনে নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা বলেন, ২০১৭-১৮ সেশনে হইকোর্টের কিছু কাগজপত্র দেখিয়ে এবং ভর্তি হওয়ার তিন মাসের ভেতর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন এনে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আমাদের ভর্তি নেয় কলেজটি। কিন্তু ভর্তি হওয়ার পর তারা আমাদের নানাভাবে মিথ্যা আশ্বাস ও হুমকি দিতে থাকে। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে প্রথম প্রফেশনাল পরীক্ষার মাত্র দুইদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শর্ত সাপেক্ষে আমাদের স্টুডেন্ট রেজিস্ট্রেশন দেয়। স্টুডেন্ট রেজিস্ট্রেশন পাওয়ার পরে নাইটিংগেল কর্তৃপক্ষ নানাপ্রকার দূর্নীতি ও অনিয়মের বেড়াজালে জড়িয়ে পড়ে। ফলে হাসপাতালের অবস্থা দিন দিন অবনতি হতে থাকে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হাসপাতালে পর্যাপ্ত ডাক্তার ও সুযোগ সুবিধা না থাকার কারণে এটি রোগীশূন্য হাসপাতালে পরিণত হয়েছে। এখানে সপ্তাহে একজন বা দুইজন রোগী ভর্তি হয়। আমরা বারবার বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন এনে দেওয়ার কথা বললে কর্তৃপক্ষ আমাদের নানাভাবে হুমকি দিতে থাকে। তারা একের পর এক তারিখ পেছাতে থাকে। বিএমডিসি নিজে থেকে পরিদর্শনে আসার জন্য দুইবার চিঠি পাঠানোর পরও কর্তৃপক্ষ তাদের চিঠি গ্রহণ করেনি। নাইটিংগেল কর্তৃপক্ষ কখনো চায় নি বিএমডিসি কর্তৃপক্ষ ইনভেস্টিগেশনে আসুক। কারণ তারা জানে বিএমডিসি ইনভেস্টিগেশনে আসলে তারা কখনো অনুমোদন পাবে না। এ রোগীশূন্য হাসপাতালে আমরা স্টুডেন্টরা কি শিক্ষা গ্রহণ করব তা আমাদের বোধগম্য নয়। 

শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, বর্তমানে চতুর্থ বর্ষে স্থায়ী কোনো শিক্ষক নেই। গেস্ট শিক্ষক দিয়ে আমাদের পাঠদান করানো হত। তৃতীয় বর্ষে কোনো শিক্ষক নেই। এই মেডিকেলে ল্যাব পুরোপুরি খালি অবস্থায় রয়েছে কোনো ইকুয়েপমেন্ট নেই। দ্বিতীয় প্রফে ফরেনসিক মেডিসিন পরীক্ষায় পয়জনের বোতলে পানি নিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, হাসপাতাল ও কলেজ উন্নয়ন করার জন্য আমরা বারবার কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলেও তারা আমাদের কথার কোনো মূল্যায়ন করেনি। বরং বারবার আমাদের হুমকি দিতে থাকে। কর্তৃপক্ষ বলেন, আমরা চাইলে তোমাদের ৫০ জন স্টুডেন্টকে গুম করে ফেলতে পারি এবং আরও নানাভাবে তারা হুমকি দিতে থাকে। অবশেষে আমরা চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা ২১ সেপ্টেম্বর সব প্রকার ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত নেই।। অনেকদিন পার হয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ করেনি। কয়েকমাস আগে আমাদের মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল দীপক কুমার সাংবাদিকদের কাছে তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীর উপস্তিতি পুরোপুরি অস্বীকার করেন।

এ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা মাইগ্রেশন নিয়ে অন্য মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, মাইগ্রেশন হয়ে অন্য মেডিকেল কলেজ থেকে আমরা এমবিবিএস ডিগ্রি শেষ করতে চাচ্ছি। তা হলে, এই মেডিকেল কলেজ থেকে আমরা চিকিৎসক হতে পারবো কি না তা নিয়ে আমরা সন্ধিহান। 

শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশনের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ডা. দীপক কুমার স্যানেল দৈনিক শিক্ষাডটকমের কাছে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। অধ্যক্ষ বলেন, এটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, পরিচালনার সাথে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা না করে আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? - dainik shiksha শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ - dainik shiksha অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে - dainik shiksha সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003119945526123