মাঠে পশুর হাট, দুই বিদ্যালয়ে পাঠদানে বিঘ্ন

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি |

fff601d323863bc0015f35d7d30719f5-182_THAKURGAON-ANIMAL-08

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের পাশে কোনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দৌলতপুর সোলেমান খান বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়।

দুই বিদ্যালয়ের মাঠ একটিই। সেখানে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার পশুর হাট বসে। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুটিতে পাঠদানে বিঘ্ন ঘটছে।

বিদ্যালয় দুটির কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কোনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৮৩ জন ও দৌলতপুর সোলেমান খান বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে ৪২৮ শিক্ষার্থী রয়েছে। দুই বিদ্যালয়ের মাঝখানের মাঠের বেশি অংশ উচ্চবিদ্যালয়ের।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, মাঠে একের পর এক পশু নিয়ে আসছেন হাটুরেরা। ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম মাঠজুড়ে চলছে কেনাবেচা। পাশের শহীদ মিনারে বেজে চলেছে ওষুধ বিক্রেতার মাইক। এর মধ্যেই বিদ্যালয়ে চলছে পাঠদান।

দুই বিদ্যালয়ের অন্তত ১২ জন শিক্ষার্থী জানায়, হাটের জন্য শনি ও মঙ্গলবার উচ্চবিদ্যালয়ের সময়সূচি এগিয়ে এনে সকাল সাড়ে আটটার দিকে পাঠদান শুরু করা হয়। বেলা ১১টায় ছুটি দেওয়া হয়। অনেক সময় শ্রেণিকক্ষের বারান্দায় গরু রাখা হয়।

পশুর মল ও আবর্জনা ঠিকমতো পরিষ্কার করা হয় না। দু-তিন দিন পর্যন্ত ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকে। তা থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়। শিক্ষার্থীরা মাঠে খেলাধুলা করতে পারে না।

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী কেয়া আকতার জানায়, হাটের গরুর ফাঁক দিয়ে আসতে তাদের ভয় লাগে। গত হাটে এক সহপাঠীকে গরু গুঁতো দিয়ে আহত করে।

তবে তৃতীয় শ্রেণির নয়ন কিসকু বলে, ‘মাঠে হাট বসানোর কারণে গরুর রচনা ভালো লিখতে পারি।’ এরপর গড়গড় করে সে বলে, ‘গরু একটি গৃহপালিত পশু। গরুর দুইটা কান, দুইটা চোখ ও চারটা পা আছে। গরু হাম্বা, হাম্বা করে ডাকে।’

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফাতেমা খানম বলেন, হাটের দুই দিন অনেক শিশু ভয়ে বিদ্যালয়ে আসে না। বিদ্যালয় মাঠে হাটবাজার বন্ধের অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হলেও কাজ হয়নি।

দৌলতপুর সোলেমান খান বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গজেন্দ্রনাথ রায় বলেন, পশুহাট বসার কারণে তেমন সমস্যা হয় না। হাটের দিন সকালে পাঠ সেরে নেওয়া হয়। হাট বসার জন্য ইজারাদার তাদের সামান্য টাকা দেন। তা শিক্ষকেরা ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নেন।

খোঁচাবাড়ি হাটের ইজারাদার গণেশ ঘোষ দাবি করেন, স্থান সংকুলান না হওয়ায় বিদ্যালয়ের মাঠে পশুর হাট বসানো হয়। এ কারণে প্রতিবছর উচ্চবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ৬০ হাজার টাকা দিতে হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়কে কিছু দিতে হয় না।

জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এখানে গরুর হাট বসছে। এখান থেকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় করে। তবে প্রশাসন যদি অন্যত্র হাট সরিয়ে নিতে পারে, তাহলে ভালো হয়।

সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে পশুর হাট বসার কারণে শিশুদের পাঠদানে ব্যাপক ক্ষতি হয়।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে কখনো অভিযোগ করেনি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ - dainik shiksha বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি - dainik shiksha যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই - dainik shiksha শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী - dainik shiksha বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.012856960296631